প্রকাশিত : ২ জানুয়ারী, ২০২১ ১৯:৩০

সক্রিয় সংঘবদ্ধ চক্র!

ত্রুটিযুক্ত একই দলিল রেজিস্ট্রিকরণে সাব-রেজিস্ট্রারের বার-বার অস্বীকৃতি!
শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
সক্রিয় সংঘবদ্ধ চক্র!

দলিল রেজিস্ট্রির সময় দলিলের সাথে সংযুক্ত কাগজপত্র শত-ভাগ স্বচ্ছ না থাকায় দলিল রেজিস্ট্রিকরণে আবারো অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার মো: নুর-এ-আলম। এর আগে ওই একই দলিল গত (২৫নভেম্বর) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছেও রেজিস্ট্রির জন্য দাখিল করা হয়েছিল, যার (দলিলের) সাথে সংযুক্ত কাগজপত্রের শতভাগ শুদ্ধতা না পাওয়ায় রেজিস্ট্রিকরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার। তবে জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট দলিল অবশ্যই পরবর্তীতে জাল দলিল হিসেবে গণ্য হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। তার পরেও যেকোনো ভাবে ওই ত্রুটিযুক্ত দলিল রেজিস্ট্রি করতে বগুড়ার শেরপুর ও বিভিন্ন এলাকার লোকজনের অংশগ্রহনে একদল সংঘবদ্ধ চক্র এখনও সক্রিয় রয়েছে। শেরপুর সাব-রেজিস্ট্রার বার-বার ওই ত্রুটিযুক্ত দলিল রেজিস্ট্রি করতে অস্বীকৃতি জানালেও রেজিস্ট্রারিং কর্মকর্তার কাছে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন মহল থেকে তদবির ও মোটা অংকের টাকা দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রির পায়তারা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার ২১ ডিসেম্বর সর্বশেষ ওই দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রির জন্য শেরপুরের রেজিস্ট্রারিং কর্মকর্তার কাছে তদবির করে আবারও ব্যার্থ হয় ওই সংঘবদ্ধ চক্র।কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে, দানপত্র করার জন্য ওইদিন দাখিলকৃত ওই দলিলের খাজনা-খারিজ বা নামজারী খতিয়ান না থাকায় দলিলটি রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি বলে জানান রেজিস্ট্রারিং কর্মকর্তা। পরবর্তীতে ওই দলিল রেজিস্ট্রির জন্য জেলা রেজিস্ট্রারিং কর্মকর্তার কাছেও চক্রটি তদবিরের চেষ্টা করছে মর্মে বিশ^স্তসুত্রে জানা গেছে। দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদন আইনের প্রজ্ঞাপনে ১৮৮২ এর ৫৩সি ধারা অনুসারে, দলিলমূলে বা যেকোনো ভাবে প্রাপ্ত জমির নামজারী খতিয়ান না থাকলে সে জমি বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যাবেনা মূলে সরকারি বিধি নিষেধ রয়েছে। ওই দলিলের দাতা ছিলেন, ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার মো: গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী অজুফা খাতুন। তিনি তার নানার চাচার সম্পত্তির অপ্রযোজ্য বা পরিত্যক্ত ওয়ারিস হিসেবে শেরপুর মৌজার ২৭ শতাংশ সম্পত্তির দানপত্র দলিল সৃষ্টির চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। উক্ত দানপত্র সম্পত্তির ভুয়া ওয়ারিশের সাথে একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই দলিল সৃষ্টির কাজে নিযুক্ত ছিলেন। উক্ত অস্বচ্ছ বা জাল দানপত্র দলিলের গ্রহিতা সহ রেজিস্ট্রির জন্য তদবিরে  শেরপুর শহরের রামচন্দ্রপুরপাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল মজিদ, মির্জাপুরের সোনাউল্লাহর ছেলে আবু রায়হান, নদীগ্রাম উপজেলার পাইকারকুড়ি গ্রামের আকবর আলীর ছেলে মো. হুমায়ন কবীর ও সারিয়াকান্দির জনৈক পবন বর্মন সহ একাধিক সংঘবদ্ধচক্রের হোতাদের নাম উঠে এসেছে।  উল্লেখিত ব্যক্তিরা বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন সময় ওই দলিল রেজিস্ট্রির জন্য সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে তদবির করছেন বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে শেরপুর দলিল লেখক সমিতির উপদেষ্টা আব্দুল মতিন বলেন, ওই বিতর্কিত দলিল সম্পর্কে আমরা(দলিল লেখকগণ) অবগত। কোন ক্রটিযুক্ত বা অসংগতিপূর্ণ দলিল রেজিস্ট্রি সম্পাদন যেন না হয়, সে বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।এ ব্যাপারে শেরপুরের সাব-রেজিস্ট্রার মো. নুর-এ আলম বলেন, ওই সম্পত্তির রেজিস্ট্রি কাজে সংযুক্ত কাগজপত্রে অসামঞ্জস্যপূর্ণ পরিলক্ষিত হওয়ায় রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছেনা। এ প্রসঙ্গে জানতে বগুড়া জেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. রফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

  দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে