লাশের হাতের ট্যাটুতে লেখা ‘ফাম্মিকে’ ঘিরে তদন্তে পুলিশ
![লাশের হাতের ট্যাটুতে লেখা ‘ফাম্মিকে’ ঘিরে তদন্তে পুলিশ](./assets/news_images/2021/01/21/biden-20210121093230.jpg)
সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানার খাদিম বিআইডিসি এলাকায় ছুরিকাঘাতে খুন হওয়া যুবক নাইম আহমদের হাতে লেখা ফাম্মি নামের এক নারীকে ঘিরে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা ফাম্মির সঙ্গে নিহত নাইমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তদন্তে এমন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত নাইমের বন্ধু দেলোয়ার হোসেন সবুজকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (২০ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে আটক দেখানো হয়। এরআগে সকালে জিজ্ঞাসাবদের জন্য তাকে থানায় ধরে আনা হয়েছিল।
আটক সবুজ (২২) সিলেটের গোয়াইনাঘাট উপজেলার ফতেহপুরের বড়নগর গুলনি চা-বাগানের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি বর্তমানে শাহপরান এলাকার চামেলীবাগে বসবাস করেন।
সন্ধ্যায় সবুজকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, নাইম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ফাম্মির সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় অন্যদের সাথে এনিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশের একটি দল ফাম্মিসহ কয়েকজনকে সন্দেহের তালিকায় রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ঘটনার পর থেকেই রাব্বি ও সবুজ নামে দুজন পলাতক রয়েছে।
বুধবার বিকেলে নিহত নাইমের ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখন শাহপরাণ থানায় মামলা হয়নি। নিহত নাইম শাহপরাণ এলাকার প্রত্যাশা ১১৯নং বাসার মৎস্য ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিনের ছেলে। শাহপরাণ মাজার গেইট এলাকার তার বাবা মাছের ব্যবসা রয়েছে।
শাহপরাণ থানার ওসি সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, নাইম হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়নি। তবে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে নিহত নাইমের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। পুলিশ বেশ কিছু বিষয় মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, নাইম হত্যার ঘটনায় তার বন্ধু সবুজসহ ৩/৪ জনকে আমরা থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একজনকে আটক দেখানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, নিহত নাইমের বাম হাতে ট্যাটু রয়েছে। সেই ট্যাটুতে (এনপ্লাসএফ) লেখা রয়েছে। সেই সাথে বাম হাতে একাধিক ব্লেডের কাটা পুরাতন দাগ আছে। নাইম পেশায় একজন শ্রমিক। ঘটনার দিন নাইমের কাজ না থাকায় বাসায় ছিলেন।
গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে নাইমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দ্রুত আসার তাগিদ দেন নাইমের বন্ধু সবুজ ও রাব্বি। নাইমের বুক, পিঠ ও হাতে ছোট-বড় ৮টি ধারালো ছোরার আঘাত রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুতর আঘাতটি বুকের। আঘাতটি বেশ গভীর হওয়াতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নাইমের মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আনিস নামের এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শাহপরাণ থানায় ফোন করে জানায় শাহপরাণ থানার কৃষি-খামার স্লুইচ গেট সংলগ্ন প্রধান সড়ক থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার ভেতরে রাস্তার পাশে একজন যুবককে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
শাহপরান থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং অজ্ঞান অবস্থায় নাইমকে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাইমের বোন রুজি বেগম জানান, নাইমের বন্ধু সবুজ এবং রাব্বি তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। তাদের ফোনের তাড়ায় আমার ভাই ভাত না খেয়ে বেরিয়ে যায়। জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে নিয়ে আমরা ভাইটাকে হত্যা করা হয়েছে।
নাইমের মামা আলাউদ্দিন জানান, রাব্বি, সবুজ মাদকাসক্ত। তারা নাইমকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে।