প্রকাশিত : ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ১১:০০

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী

অনলাইন ডেস্ক
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী

অসংখ্য জনপ্রিয় বাউল গান ও গণসংগীতের রচয়িতা বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০৫তম জন্মবার্ষিকী আজ (১৫ ফেব্রুয়ারি)। ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই বাউল সম্রাট।

বাউল আব্দুল করিম স্বশরীরে আমাদের মাঝে না থাকলেও তার গান ও সুরধারা কোটি তরুণসহ সকল স্তরের মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। কিংবদন্তিতুল্য এই শিল্পী ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষের কাছে আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি।

আব্দুল করিমের জন্মবার্ষিকীতে প্রতি বছর করিমের জন্মস্থান উজানধল ও সুনামগঞ্জে ব্যাপক অনুষ্ঠান হলেও এবার করোনা মহামারির কারণে ছোট পরিসরে অনুষ্ঠান করবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি।

‘বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে/ আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম/ গাড়ি চলে না/ আমি কূলহারা কলঙ্কিনী/ কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া/ কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু/ বসন্ত বাতাসে সইগো/ আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু/ সখী কুঞ্জ সাজাও গো’সহ অসংখ্য কালজয়ী ও গণজাগরণের গানের রচয়িতা বাউল শাহ আব্দুল করিম।

শাহ আব্দুল করিম অত্যন্ত সহজ-সরল জীবনযাপন করতেন। গানে-গানে অর্ধ শতাব্দিরও বেশি সময় লড়াই করেছেন ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে। এজন্য মৌলবাদীদের দ্বারা নানাভাবে লাঞ্চনার শিকার হয়েছিলেন তিনি। তিনি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রেরণা ও গণসংগীত গেয়ে গেয়ে লাখ লাখ তরুণকে উজ্জীবিত করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক।

গানের মধ্যে তাকে বাঁচিয়ে রাখতেই সবার মাঝে তার গান ছড়িয়ে দিতে চান ভক্তরা। শাহ আব্দুল করিমের গান সঠিক সুরে সঠিকভাবে গাওয়া, গানগুলো সংরক্ষণ করা এবং তার জন্মভিটায় সঙ্গীতালয় ও একটি একাডেমি নির্মাণের দাবি বাউল ভক্তদের।


বাউল শিল্পী আল হেলাল জানান, শাহ আব্দুল করিম স্মৃতি জাদুঘর হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে মাজার। এখন যদি একটা সঙ্গীতালয় হয় তাহলে আমরা বাউলবৃন্দ যারাই এখানে আসব শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো লালন করতে পারব।

সাংস্কৃতিক কর্মী পুলক রাজ জানান, শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো যদি ভালো করে সংরক্ষণ করা হয় তাহলে আগামী প্রজন্মের মানুষরাও বাউলের গান সম্পর্কে জানতে পারবে।

বাউল শিল্পী কবির আহমদ জানান, আমরা বাউলরা গানের মাধ্যমে শাহ আব্দুল করিমকে ধরে রাখতে চাই। সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই শাহ আব্দুল করিম নামে একটা সংগীত বিদ্যালয় নির্মাণ করা হলে সব বাউলরা এক জায়গায় বসে গানবাজনা করতে পারব।

সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শাহ আব্দুল করিমের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে করোনা ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠান করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আব্দুল করিমের স্মরণে তার গ্রামের বাড়ি উজান ধলে একটি সংগীতালয় একাডেমি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেখানে উপযুক্ত জায়গা খোঁজা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে জায়গা বাছাই করে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য। প্রস্তাব পাওয়ার পরপরই একাডেমি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার/সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে