প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০২১ ২১:৪৬

ধুনটে ৭টি প্রকল্পের কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার উধাও!

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
ধুনটে ৭টি প্রকল্পের কাজ ফেলে
রেখে ঠিকাদার উধাও!

বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকায় সড়ক ও ড্রেন নির্মানসহ প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য খোঁড়াখুড়ি করে ফেলে রেখে ঠিকাদাররা উধাও হয়ে গেছে। এরমধ্যে একটি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শুরুই করা হয়নি। এতে পৌর এলাকায় চলাচলে লোকজনকে দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া এসব প্রকল্পের কার্যাদেশ পাওয়া দুই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কাজ বন্ধ রেখে আংশিক বিল উত্তোলনেরও অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, পৌর নাগরিকের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য নতুন সড়ক নির্মান, পুরাতন সড়ক সংষ্কার, পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মান, কবর স্থানের সীমনা প্রাচীর ও গেট নির্মান এবং পৌর শিশু পার্কের সীমানা নির্মানসহ ৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৫২ টাকা। পৌর কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহবানের মাধ্যমে দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিয়েছে। কিন্ত ঠিকাদাররা এসব প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখায় পৌরবাসিকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

প্রকল্প গুলোর মধ্যে রয়েছে, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় ধুনট পোষ্ট অফিস হতে হলহলিয়া নদী পর্যন্ত ৩০০ মিটার ড্রেন নির্মান ও আর্সেনিক মুক্ত ১৪৬টি হস্ত চালিত নলকূপ স্থাপন। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯ লাখ টাকা ৯৪ হাজার ৬৯৮ টাকা। মেসার্স রুনা এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারী কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে। কিন্ত ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৫০ শতাংশ কাজ করে বরাদ্দের ৪৯ লাখ ৯১ হাজার ৫০৯ টাকা উত্তোলন করেছে। 

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসুচীর আওতায় পূর্ব ভরণশাহী জান্নাতুল মাওয়া কবর স্থান ও চরধুনট জান্নাতুল ফেরদৌস কবরস্থানের সীমনা প্রাচীর ও গেট নির্মান এবং শিশু পার্কের সীমানা প্রাচীর নির্মান প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৭৫০টাকা। মেসার্স সুমাইয়া ট্রেডার্স নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ২০১৯ সালের ৯ জুন কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই কাজের সময় ছিল ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পের ৭০ শতাংশ কাজ করে ঠিকাদার ৫ লাখ ৯১ হাজার ৬৫৫ টাকা উত্তোলন করেছে। 

গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাইপাস সড়ক হতে মাটিকোড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত ৫২০ মিটার সড়ক সংস্কার এবং ধুনট-গোসাইবাড়ি সড়ক হতে জিঞ্জিরতলা জামালের বাড়ি হয়ে বিসি সড়ক পর্যন্ত আরসিসি ৩৮৫ মিটার রাস্তা নির্মান। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৪ টাকা। মেসার্স সুমাইয়া ট্রেডার্স নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর প্রকল্পের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই কাজের সময় ছিল ২০২০ সালের ৬ জুন পর্যন্ত। ঠিকাদার কাজ না করেই ১৫ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪২ টাকা উত্তোলন করেছে।     

মেসার্স সুমাইয়া ট্রেডার্সের মালিক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার লাইসেন্সসে ঠিকাদার মোমিন সোহেল ও সাবেক কাউন্সিলর দয়াল চন্দ্র প্রকল্পের কাজ নিয়েছেন। কিন্ত তারা সময় মত কাজ শেষ করতে পরেননি। তাদের বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও কাজ শেষ না করায় আমি কাজ গুলো শেষ করার উদ্যোগ নিয়েছি। 

মেসার্স রুনা এন্টারপ্রাইজের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা দূর্যোগের কারণে প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছিল। দুই একদিন পরই কাজ শুরু করে দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করা হবে।  

ধুনট পৌর সভার মেয়র এজিএম বাদশাহ বলেন, পৌর এলাকায় ৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। এ জন্য আমি এলাকাবাসির কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্প গুলোর কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে