প্রকাশিত : ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০৯:৫৯

বৃষ্টির অভাবে উৎপাদন ব্যাহতের শঙ্কা, চিন্তায় আমচাষিরা

অনলাইন ডেস্ক
বৃষ্টির অভাবে উৎপাদন ব্যাহতের শঙ্কা, চিন্তায় আমচাষিরা

আমের জন্য সবার কাছে পরিচিতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এ জেলাকে কেউ বলেন আমের জেলা, আবার কেউ বলেন আমের রাজধানী। সে রাজধানীতে সবখানেই গাছের মুকুল থেকে ইতোমধ্যে ঝরে পড়েছে আমের গুটি।

গাছে গাছে আমের গুটি দেখা গেলেও দীর্ঘ ছয়-সাত মাস ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে চিন্তিত আমচাষি ও বাগান মালিকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে প্রায় ৯৮ ভাগ গাছেই মুকুল আসে। জেলার পাঁচ উপজেলায় আমবাগান রয়েছে ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর। বাগানগুলোতে গাছের সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ।

জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হওয়ায় এ আমকে ঘিরেই এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের মুখের হাসি যেন মলিন হয়ে গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নয়াগোলা, কোর্ট এলাকা, শিবগঞ্জ, বিরামপুর মরদানাসহ বেশ কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, আমের গুটি বের হওয়া শুরু হয়েছে। কোনোটি ছোট, আবার কোনোটি একটু বড়। বৃষ্টি না হওয়ায় আমের গুটি স্বাভাবিকভাবে বড় হচ্ছে না। আবার যে গুটিগুলো এক সপ্তাহ আগে ফুটেছিল তাও ঝরে পড়েছে।

আজয়পুর গ্রামের মারুফ নামে এক আম ব্যবসায়ী জানান, এ বছর আমের গুটি ভালোই এসেছে। তবে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

কানসাট এলাকার আরিফ বলেন, চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ মুকুল এসেছিল। আর সময়মত গুটি আসায় আশা করেছিলাম ভালো ফলন হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় বেশ চিন্তার মধ্যে রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সামর্থ্য অনুযায়ী আম গাছে পানি দিয়ে স্প্রে করছি। এছাড়া গাছের গোড়ায়ও পানি দেয়া হচ্ছে। খরচের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে আর কিছু করার নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, এবার ভালো মুকুল আসার পাশাপাশি গুটিও সময়মতো এসেছে। তবে গত ৯ অক্টোবর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি। এ মুহূর্তে বৃষ্টি হলে ফলন ভালো হবে। না হলে আম উৎপাদনে ব্যাহত হতে পারে।

খরচ বেশি পড়লেও আমচাষিদের গাছে পানি দেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দিন বলেন, এখন পর্যন্ত এ জেলায় বৃষ্টি হয়নি। পানির জলাধার থেকে সেচের মাধ্যমে গাছ স্প্রে করলে আমের গুটি রক্ষা পাবে।

তিনি আরও বলেন, খরার কারণে গাছগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। তাই গাছের গোড়ায় একটু গর্ত করে পানি দিলে গাছগুলোও এ অবস্থা থেকে রক্ষা পাবে।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে