বেড মাত্র ৮টি, দিনেই ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক ডায়রিয়া রোগী
![বেড মাত্র ৮টি, দিনেই ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক ডায়রিয়া রোগী](./assets/news_images/2021/04/21/hospi-20210421091939.jpg)
হঠাৎই বরগুনায় শুরু হয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত শতাধিক রোগী বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেড না থাকায় মেঝেতে ঠাঁই নিয়েছেন অনেকে। চিকিৎসক সংকটে রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ জন রোগী আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ৪৩ জন। এর মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু।
জেনারেল হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, মার্চের শুরু থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকে। প্রথম সপ্তাহে গড়ে ২৫-৩০ জনের মতো রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হতো। গত তিনদিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গড়ে ১০০ জনে পৌঁছায়। সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় তা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্রোতের মতো রোগী ভর্তি হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২০৭৪ জন রোগী ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে বেড রয়েছে মাত্র আটটি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেড না থাকায় রোগীরা হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতেছেন।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ৫৯৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব মতে এ সময় মৃত্যুর সংখ্যা ২ হলেও বেসরকারি হিসাবে মৃতের ৪। এরমধ্যে বেতাগীতেই মারা গেছেন ৩ জন।
মঙ্গলবার সকালে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের নিচতলার মেঝেতে অনেকেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু, নারী ও বৃদ্ধ। মেঝের নোংরা ও অপরচ্ছিন্ন পরিবেশে গাদাগাদি করে অবস্থান নিতে হয়েছে তাদের। এতে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
চিকিৎসাধীন কয়েকজন রোগী জানান, বেড না থাকায় মেঝের নোংরা পরিবেশে তাদের অবস্থান নিতে হয়েছে।
সাজু নামের এক ব্যক্তি জানান, তিনি গতরাতে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্ত এখনো পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক চিকিৎসা দিতে আসেননি। শুধুমাত্র সেবিকারা এসে রাতে স্যালাইন দিয়েছেন।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (আবাসিক) সোহরাব উদ্দীন বলেন, এমনিতেই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক নেই, নেই বেডও। এ অবস্থায় হঠাৎ বিপুল সংখ্যক রোগী ভর্তি হওয়ায় আমার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে দু’একদিনেই প্রয়োজনীয় ওষুধপথ্যের সংকট দেখা দেবে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করতে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান জানান, গরমের মৌসুম শুরু হওয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূলের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা অতটা স্বাস্থ্য সচেতন নন, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকার কারণে রোগ জীবানুর আক্রমণের শিকার হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন