এবছরও করোনা কারণে গরুর দাম নিয়ে সংকার মধ্যে রয়েছে খামারীরা
![এবছরও করোনা কারণে গরুর দাম
নিয়ে সংকার মধ্যে রয়েছে খামারীরা](./assets/news_images/2021/06/16/1623742696038.jpg)
জননেত্রীর শেখ হাসিনার আহŸানে চাকুরির পিচে না ঘুরে শিক্ষিত বেকার যুবকরা নিজে উদ্যোক্ত হয়ে গড়ে তুলেছেন দেশী ও বিদেশী গরু মোটা তাজা ও প্রতিপালনের খামার। আসন্ন ঈদ কে সামনে রেখে দীর্ঘ কয়েক মাস বিভিন্ন বয়সের গরু কিনে ফার্মে প্রতিপালন করে লাভের আশায় অতি যতেœ লালন পালন করেছেন খামারীরা। বর্তমানে করোনার কারণে মানুষের আয় ইনকাম অনেক অংশে কমে যাওয়ায় এবং ব্যবসায়ীদের মন্দভাব এর কারণে অতি যতেœ পালন করা ফার্মের গরুগুলি নিয়ে সংকায় পড়েছেন খামারীরা। গত বছর করোনার কারণে অনেক খামারীরা গরু বিক্রি করে তাদের পুঁজি ঠিক রাখতে পারেননি। এবারও লাভের আশায় বুক বেঁধে নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে খামার চালিয়ে যাচ্ছেন লাভের আশায়। ঈদের বাজারে কি হবে এই নিয়ে রয়েছেন সংকার মধ্যে। উপজেলায় প্রায় ২ হাজার খামারী ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে ষাড় ১৬ হাজার ৫শত ২০, বলদ ২ হাজার ২শত ৫, গাভী ২দুই ৪৭, মহিষ ৩৫, ছাগল ১৯ হাজার ৮শত ২, ভেড়া ২ হাজার ১শত ৬৬ গবাদি পশু মোটা তাজা করার লক্ষ্যে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে উপজেলার হাট বাজার গুলোতেও মাংসের চাহিদা তুলনামুলক ভাবে কম।
এ বছরও ঈদুল আযহায় করোনাভাইরাসের আতঙ্কে গরু হাটে বিক্রিকরা ও বাজার দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে এখানকার খামারীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জাফরিন রহমান এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে গরু মোটা তাজা করছেন খামারীরা। গরুর মাংস উৎপাদনের দিক থেকে এ উপজেলা অনেক এগিয়ে। উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ২ হাজার গরু মোটা তাজা করণ খামার গড়ে উঠেছে। স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত গরু থেকে ৯০ ভাগ মাংসের চাহিদা পূরণ করা হয়। ঈদুল আযহায় গরু বিক্রি করার জন্য প্রায় ষাড় ১৬ হাজার ৫শত ২০, বলদ ২ হাজার ২শত ৫, গাভী ২দুই ৪৭, মহিষ ৩৫, ছাগল ১৯ হাজার ৮শত ২, ভেড়া ২ হাজার ১শত ৬৬ গবাদি পশু লালন পালন করছে খামারীরা।
এ উপজেলায় গবাদীপশু কেনা বেঁচা করার জন্য বড় হাট গুলোর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মহাস্থান হাট, বুড়িগঞ্জ হাট, দাড়িদহ হাট, ডাকুমারা হাট উল্লেখ করার মতো। এই হাট গুলো ছাড়াও ঈদুল আযহায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও ২৫ থেকে ৩০ টি অস্থায়ী হাট বসে। করোনার কারণে এসব হাট বসবে কিনা তা নিয়েও সঙ্খিত খামারীরা। উপজেলার খামারীদের মধ্যে অনেক বেকার যুবকেরা সরকারি , আধা সরকারি, এনজিও চালিত ব্যাংক ঋণ নিয়ে গবাদি পশুর খামার গড়ে তুলছে।
এখানকার গরু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হয়। খামারে গরু মোটা তাজা করণের প্রক্রিয়া চলছে। এখন শুধু ঈদুল আযহার আপেক্ষায় দিন গুনছে এলাকার গরু খামারীরা। উপজেলার গরু ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, রাজশাহী , সিলেট, চট্টগ্রাম সহ দেশের বড় বড় বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর ইউনিয়নের খামারী মাস্টার ডেইরী এন্ড পোল্ট্রি ফার্ম এর স্বত্বাধিকারী রেহেনা বেগম বলেন, গত বছর ৯টি গুরু তিনি ২৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। এ বছর তিনি ৪টি গরু বিক্রি করবেন। তার গরুর মূল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা হাকছেন। শিবগঞ্জ ইউনিয়নের আলাদীপুর এরুলিয়া পাড়া গ্রামের প্রাণি পল্লী চিকিৎসক জাফর মন্ডল বলেন, গত বছর আমার ২টি ষাড় মন্ডল ও সুন্দর কম দাম হওয়ায় বিক্রি করিনি তবে এবছর আমার ষাড়ের ওজন সাড়ে ২৭ মন হয়েছে। তবে আমি আশা করছি। এ বছর ভাল দামে বিক্রি করতে পারবো। তবে বাজারে গোখাদ্যের দাম অগের তুলনায় অনেক বেশি। এবার করোনা কালিন সময়ে বর্তমান সরকারের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাসন সীমান্তবর্তী এলাকা লক ডাউন ঘোষনা করেছেন। গত বছরের চেয়ে এবারের লক ডাউন অনেক করাকরি আরোপ করা হয়েছে, যদি ভারত থেকে গরু চোরাই পথে না আসে তাহলে আমাদের দেশী গরুগুলি কাঙ্খিত মূল্যে বিক্রি করতে পারবো। এতে করে গত বছরের লোকসানের ঝুঁকি কাটিয়ে উঠে লাভের মুখ দেখবো বলে আশা করছি। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। দেশীয় গরুর ফার্মের সাফল্য ধরে রাখতে এবং বেকার যুবকদের আর্থিক ভাবে লাভবান হয়ে আরো নতুন ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে বেকার জীবনের অবসান ঘটিয়ে নিজে উদ্যোক্তা হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে এগিয়ে আসা সম্ভব হবে। ভারতীয় গরু আসা বন্ধ না হলে আবারও লোকসানের আশংকা করছে খামারীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জাফরিন রহমান আরও বলেন, খামারীদের সার্বক্ষনিক পরামর্শ প্রদান করে আসছি। তাদের পালনকৃত গবাদীপশু নিয়ে যে কোন সমস্যায় প্রাণী সম্পদ বিভাগ পাশে থাকবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন