প্রকাশিত : ১৬ জুন, ২০২১ ২৩:৫৭

সীমান্তের জেলায় করোনা বড় ঝুঁকিতে বগুড়া জেলা

এইচ আলিম
সীমান্তের জেলায় করোনা 
বড় ঝুঁকিতে বগুড়া জেলা

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সীমান্ত জেলার রোগী আসছে বগুড়ায়। সীমান্ত জেলায় রোগীরা ভারতীয় ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে থাকলে সেটির কারণে বগুড়া জেলা বড় ঝুঁকির মধ্যে পরে যাবে। আক্রান্তরা কোন ভেরিয়েন্টে চিকিৎসা নিচ্ছে তা জানা না গেলেও বগুড়া যাচ্ছে ঝুঁকির মুখে। 

উত্তরের জেলার মধ্যে বগুড়া অন্যতম জেলা হওয়ার কারণে চিকিৎসায় সেবা ও সুযোগ পাওয়া যায় বেশি বলে সীমান্ত এলাকার জয়পুরহাট, নওগাঁ, রাজশাহী ও নাটোর জেলার বেশ কিছু রোগী আসছে বগুড়ায় চিকিৎসা নিতে। রোগী আসতে থাকায় বগুড়ায় মৃত্যু ও আক্রান্ত সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
বগুড়ায় রাজশাহী, চাঁপাইয়ের আম আসছে ইচ্ছে মত। দিনাজপুরের লিচু আসছে। ঠাঁকুরগাঁও থেকে আসছে আম। জয়পুরহাট সিমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে পিঁয়াজ। আসছে ট্রাক সঙ্গে মানুষও। তাদের করোনা টেস্ট করা হচ্ছে না। জেলা পর্যায়ের ট্রাক, মালবাহি পরিবহন চলাচল করছে দেদারছে। যদিও বগুড়ায় অ্যান্টিজেন (আধাঘন্টায় করোনার ফলাফল প্রদান করা যায়) পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। সেটিও ব্যবহার করা যেতে পারে। বগুড়া সীমানায় উপসর্গ আছে এমন ব্যক্তিদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হলে স্বাস্থ্যবিধির নিশ্চয়তা বাড়বে। বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে বগুড়ায় অ্যান্টিজেন থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। 
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (শজিমেক) সুত্রে জানা গেছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে দেশের সীমান্ত জেলা নওগাঁ, নাটোর, রাজশাহী ও জয়পুরহাটের বাসিন্দা ভর্তি হচ্ছে। ১৩ জুন টিএমএসএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নওগাঁর জেলার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান। ১১ জুন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বিষ্ণুপুুর গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক (৭৫)। ১০ জুন বগুড়া সদরের সেলিনা সুলতানা (৫৩), নাটোর সদরের আব্দুল খালেক (৬০) এবং জয়পুরহাট জেলার কালাই এলাকার সায়েদ আলী (৩৮)। ৮ জুন রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার হামিদুর রহমান (৬০) বগুড়ায় মারা যান।
বুধবার দুপুরে বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন মো: মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১৫ জুন বগুড়ায় ৪ জন মারা যান। এরমধ্যে একজন সাতক্ষিরা জেলার বাসিন্দা ও দুইজন জয়পুরহাট জেলার বাসিন্দা। বগুড়া সদরের ছিল একজন। সরকারি হিসাব মতে গত ২৪ ঘন্টায় (১৫ জুন) ২৬১ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে নতুন করে ৪১জন করোনায় শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৭৬৪ জনে দাঁড়ালো। মঙ্গলবার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (শজিমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জয়পুরহাট জেলার বাসিন্দা মোছা: লুৎফুনন্নেসা (৬০) ও সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম (৩৬), টিএমএসএস হাসপাতালে জয়পুরহাট জেলার বাসিন্দা রতন মন্ডল (৪৪) এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া এলাকার মালতী বেগম (৬৭) মারা যান। নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৩৩ জন এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৮০ জন। 
এদিকে, বগুড়ায় বুধবার পর্যন্ত জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ৩৩৩ জন। নতুন সুস্থ ৩৩ জন নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৮০ জন। জেলায় মোট করোনায় আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৭৬৪ জনে দাঁড়ালো। 
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসাপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন, হাসপাতালে করোনা রোগির সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। যতটা সম্ভব চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু এভাবে বাড়তে থাকলে চিকিৎসা সেবা প্রদান ব্যাহত হতে পারে। সীমান্ত জেলার রোগী এখন বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আগে সীমান্ত এলাকার রোগী খুবই কম আসতো। কিন্তু এখন আসছে তিনগুণ।
বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সামির হোসেন মিশু জানান, সীমান্ত জেলার কিছু রোগী বগুড়ায় চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর স্বজনদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোগী চিকিৎসা নিতে আসলে বগুড়ার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সেবা প্রদান করে যাবে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার /  সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে