প্রকাশিত : ১৯ জুলাই, ২০২১ ২৩:৩৯

বগুড়ায় শেষ সময়ে কোরবানির হাট জমে উঠেছে তবে দাম বেশি

এইচ আলিম
বগুড়ায় শেষ সময়ে কোরবানির 
হাট জমে উঠেছে তবে দাম বেশি

বগুড়ায় একেবারে শেষ মূহুর্তে এসে কোরবানিদাতা ও ব্যাপারীদের দৌরাত্বে জমে উঠেছে কোরবানির হাট। সোমবার বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জ হাটে ব্যপারীদের ব্যস্ততা ছিল বেশি। ছোট আকারের গরুগুলো দ্রুত কেনায় ব্যস্ত ছিল তারা। দল বেঁধে ব্যাপাীররা গরু কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকার পথে। এদিকে বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলছেন, ১৮ জুলাই পর্যন্ত জেলার প্রস্তুতকৃত কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে ৭০ শতাংশ পশু বিক্রি হয়েছে।

জানা যায়, ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বগুড়ায় মাত্র আর একদিন হাটবার আছে। আর সোমবার বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জ হাটে সব ধরনের ক্রেতায় ঠাসা ছিল। কোরবানিদাতাদের সাথে দৌরাত্ব ছিল গরু ও ছাগলের ব্যাপাীরদের। সকাল থেকে তারা হাটে অবস্থান নিয়ে খামারিদের কাছ থেকে গরু ও ছাগল কিনতে দেখা যায়। দুপুর থেকে হাটের বাহিরে থাকা ট্রাকে গরু বোঝাই করে রওনা দেয় ঢাকার পথে। এক হাট থেকেই বিকালের মধ্যেই প্রায় ৬টি ট্রাক বগুড়া থেকে ছেড়ে যায়। এদিনে হাটে প্রচুর গরুর আমদানি হয়। হাটের কোথাও ফাঁকা ছিল না। ক্রেতাও ছিল প্রচুর। তবে ক্রেতাদের সিংহভাগই শহরের। সোমবার বগুড়ার সুলতানগঞ্জ হাটে গরু ও ছাগলের চড়া দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। গত দিনে যে আকারের গরু ৫৫ থেকে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে দেখো গেছে সেই আকারের গরুর দাম হাঁকানো হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। দরদামে সেইসব গরু বিক্রি হয়েছে ৭৫ থেকে ৮৫ হাজার টাকায়। হাটে গরুও যেমন বেশি উঠেছে তেমনি দামও হয়েছে বেশি। এদিকে গরুর ব্যাপারীরা বগুড়া মহাস্থান হাট এলাকায় ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আবাসিক হোটেল ও বাড়ি ভাড়া নিয়েছে। বিভিন্ন হাট থেকে গরু সংগ্রহ করে সেই বাড়িতে রেখে আকার অনুযায়ি ২০ থেকে ২৮ টি গরু জমিয়ে ট্রাকে লোড দিচ্ছে।
গরুর ব্যাপারী জহুরুল ইসলাম জানান, যত দ্রুত ঢাকায় নিতে পারবে তত দ্রুতই তাদের আয় হবে। খামারিদের কাছ থেকে গরু কিনতেই লাভবাবন হতে হবে। বিক্রি তো হবেই। বিক্রির সময় যা লাভ হবে সেটি একটি হিসাব মাত্র। তিনি জানান, বিগত দিনে সড়কে মহাসড়কে নানা জটিলতা হতো বলে ঢাকায় গিয়ে গরুর দাম বেশি হতো। করোনার মধ্যে এবার সড়কে তেমন ঝামেলা নেই। সে কারণে তাদের আয় বেশি হবে বলে জানান। 
বগুড়ার সুলতানগঞ্জ হাটের কোরবানিদাতা ক্রেতা আবু সাঈদ সিদ্দিকী জানান, হাটে গরু যেমন উঠেছে তেমনি দামও বেশ চড়া। একটি মাঝারি আকারের গরুর দাম ৯০ হাজার বলার পরেও বিক্রি করেনি। বিক্রেতা ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে চায়।  
বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম তালুকদার জানান, বগুড়ায় এবার কোরবানির পশুর প্রয়োজন ৩ লাখ ২৬ হাজার। সেখানে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার। গত ঈদে এ জেলায় প্রায় ৩ লাখ ১২ হাজার কোরবানির পশু জবাই করা হয়। সেই হিসেব এবার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে ৪৭ হাজার। এই উদ্বৃত্ত পশু বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, চট্রগ্রাম, সিলেটসহ কয়েকটি জেলায় বিক্রি হবে বলে তিনি জানান। জেলায় যে পরিমান কোরবানির পশু প্রস্তুত হয়েছিল তার ৭০ শতাংশ পশু ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে বিক্রি হয়েছে। লকডাউন শিথিল হওয়ার কারণে খামারিরা সরাসরি হাট পাওয়ায় দামও বেশি পাচ্ছে। চলতি হাটে এবার সকল গরুর দাম বেশি। দাম যেসন বেশি তেমনি গরুও প্রচুর আমদানি হয়েছে। হাটে হাটে ক্রেতাও আসছে। 
বগুড়া হাইওয়ে পুলিশের এসপি মুনশী শাহাবুদ্দীন জানান, ঈদুল আযহায় মানুষ যেন দ্রুত ও নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারে সেভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কোন স্থানেই মগাসড়কে ইচ্ছেমত যানজট সৃষ্টি করা যাবে না। আবার মহাসড়কে গরু বোঝাই ট্রাক থামিয়ে কেউ যেন সুবিধা আদায় না করতে পারে সে জন্য কঠোরভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ বিভাগ থেকে কোরবানির গরু বোঝাই ট্রাক কোন বাঁধার মুখে পড়লেই দ্রুত সহযোগিতা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে