বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি থাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

বগুড়ায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিদৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় সব নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনো বড় ধরণের কোন ক্ষতির সম্মুুখিন হয়নি। তবে উপজেলা পর্যায়ে কিছু কিছু কৃষি জমি ও বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বড়বন্যা দেখা দিতে পারে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলা যমুনা নদীর বুকে গড়ে উঠেছে। প্রতি বছর বন্যায় এ তিনটি উপজেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। বিশেষ করে গ্রামীণসড়ক, কৃষিজমি ও বসতবাড়ির ক্ষতি হয়ে থাকে। এবছর ২৬ আগস্ট থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। যমুনা নদীর পানি বিদৎসীমা ১৬.৭০ মিটার এর স্থলে এখন পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৭.১৬ মিটার দিয়ে। সকাল ৬টায় ছিল ১৭.১০ মিটার। যমুনা নদীর পাশাপাশি বাঙালি নদীর পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, করতোয়া নদীর পানি বগুড়া জেলখানা পয়েন্টে বিপদসীমার ১৭৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, নাগর নদীর পানি তালোড়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে এবং যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর, মানিকদাইড়, চালুয়াবাড়ি, বোহাইল, ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। বসতবাড়িতে পানিতে ডুবে যাওয়ার কারনে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উচুঁস্থানে। কেউ আবার সমতলে ফিরে গেছে স্বজনদের কাছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত যমুনা নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৭.১৬ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে যমুনা নদীর কূল উপচে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বদিকের লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদী। কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বেড়েছে। নদীর নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি প্রবেশ করেছে। ধুনটের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন , ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পুকুরিয়া, ভুতবাড়ি, কৈয়াগাড়ি, মাধবডাঙ্গা, রঘুনাথপুর, ভান্ডারবাড়ি, দক্ষিন শহড়াবাড়ি, বানিয়াজান ও শিমুলবাড়ি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের বাড়ির আনাচে-কানাচে থৈ থৈ করছে পানি। আবার কিছু কিছু বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে এবং রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতি মহুর্তে যমুনা নদীর বাঁধ পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। বন্যা কয়েকদিন স্থায়ী হবে এবং পানি নেমে যাবে। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বড় কোন ক্ষতির মুখে পড়েনি। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে বন্যার আশংকা করা হচ্ছে। তবে বন্যা মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন