প্রকাশিত : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১১:৪৩

মাকে ছুরিকাঘাত করল ক্লোজআপ তারকা সাজু

জমির ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্ব
অনলাইন ডেস্ক
মাকে ছুরিকাঘাত করল ক্লোজআপ তারকা সাজু

জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ক্লোজআপ তারকা সংগীতশিল্পী সাজু আহমেদ তার মায়ের ওপর ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়েছেন। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের তেলিপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। আহত সাজুর মা রানীজান বেওয়াকে (৬২) কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছোরা দিয়ে আঘাত করায় রানীজানের বাম চোখের ওপরে কপালে ৩ ইঞ্চি পরিমাণ গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা জানাজানি হলে সর্বত্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। ঘটনাটি এখন টক অব দ্য ডিস্ট্রিকে পরিণত হয়েছে।

শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বড় বোন আঞ্জুমান আরা বেগম সাজু আহমেদকে আসামি করে উলিপুর থানায় অভিযোগ করেছেন। সাজুর এ ধরনের কর্মকাণ্ডে হতাশ হয়েছেন তার ভক্তরা। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্য করেছেন।

এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে সাজুর বাবা সাবেক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আজগার আলী মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে পরিবার চালাচ্ছিলেন মা রানীজান বেওয়া। এর মধ্যে সাজুর বড় ভাই ঢাকায় গার্মেন্টে কর্মরত রাজু আহমেদের মেয়ের বিয়ের জন্য তার মা দুই ভাইয়ের নামে দলিলকৃত একটি জমি বন্ধক রেখে ৫ লাখ টাকা নেন। এরপর থেকেই জমিজমার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। ১৬ আগস্ট সালিশ বৈঠক বসে। সেখানে এক বছর পর জমিজমা ভাগবাটোয়ারার সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তে নাখোশ ছিলেন সাজু। এ নিয়ে শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে মায়ের সঙ্গে তার কলহ হয়। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে ছুরি দিয়ে মায়ের মাথায় আঘাত করতে উদ্ধত হন তিনি। এ সময় তার বড় বোন আঞ্জুমান আরা সাজুকে ঝাঁপটে ধরলে মায়ের কপালে গিয়ে ছুরির আঘাত লাগে।

চিকিৎসাধীন সাজুর মা রানীজান বেওয়া জানান, ২০০৮ সালে টিভি চ্যানেল এনটিভির গানের রিয়ালিটি শো ক্লোজআপ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার আপ হয় সাজু। ওই সময় ছেলের জন্য জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে ১৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়। এরপর সেই টাকা তার ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও সে তা না করে উলটো আরও টাকা চায়। সম্প্রতি আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর সে পান্ডুল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা চালাচ্ছিল। প্রচারণার ব্যয় নির্বাহ করার জন্য সে জমি বিক্রির জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছিল। তিনি এ হামলার সুষ্ঠু বিচার চান। তবে মায়ের ওপর হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সংগীতশিল্পী ও জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির সদস্য সাজু আহমেদ।

সাজুর বড় বোন আঞ্জুমান আরা জানান, সাজু এর আগেও মা ও আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, রোগীর বাম চোখের ওপর কপালে কাটা দাগে ৭টি সেলাই দিতে হয়েছে। শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখন অবস্থা উন্নতির দিকে। উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির জানান, ঘটনা তদন্তে এসআই আনিসুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে