প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:২৭

ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বগুড়া গাবতলীতে বন্ধুরাই খুন করেছিল ইব্রাহিম কে

ষ্টাফ রিপোর্টার
ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে বগুড়া গাবতলীতে
বন্ধুরাই খুন করেছিল ইব্রাহিম কে

বন্ধুর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই বন্ধুরাই সুপরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করেছিল বগুড়ার গাবতলীর চাতাল শ্রমিক ইব্রাহিম হোসেন (২১) কে। ঘটনার ১০ ঘন্টার মাঝেই গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ইতিমধ্যেই বগুড়া জেলা পুলিশ গ্রেফতার করেছে ঘাতক সেই বন্ধুকে। উদ্ধার করা হয়েছে নীল রঙের এ্যাপাচি আরটিআর সেই মোটরসাইকেল যার কারণে ঝড়ে গেছে একটি প্রাণ।

গ্রেফতারকৃত নিহতের সেই ঘাতক বন্ধু হলেন জাহিদ হাসান মামুন(১৯) যিনি শেরপুর উপজেলার ফুলতলা গ্রামের খন্দকারটোলা এলাকার হানিফ সোনার ছেলে।
এদিকে গ্রেফতারকৃত মামুন প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে মর্মে উক্ত নির্মম হত্যার রহস্য উন্মোচনপূর্বক বিস্তারিত জানিয়ে বুধবার দুপুরে বগুড়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে নিজেই এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। 
ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার জানান, খুন হওয়া ইব্রাহিম হোসেন সিরাজগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার চায়নাবাদ গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। শেরপুর মির্জাপুর গ্রামে মামা ছামসুল বারীর ধানের চাতালে ঘটনার ৩ থেকে ৪ মাস আগে থেকে সে কাজ শুরু করে। কাজের সুবাদে এলাকায় ঘোরা ফেরার কারণে স্থানীয় যুবক ঘাতক জাহিদ হাসান মামুন সহ আরো কিছু বখাটে ছেলেদের সাথে তার বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ইব্রাহিম তার মামার ব্যবহৃত নীল রংয়ের এ্যাপাচি আরটিআর মটরসাইকেল নিয়ে ব্যবসার কাজে বিভিন্ন এলাকায় চলা ফেরা করতো। ঘটনার দিন সোমবার ১৩ (সেপ্টেম্বর) জাহিদ  নতুন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ইব্রাহিমকে শেরপুর থেকে বগুড়া শহরে ডেকে নেয়। এরপর শহরে ইব্রাহিমকে সাথে নিয়ে মদ কিনে কৌশলে ঐ রাতেই গাবতলী থানাধীন মহিষাবান ইউনিয়নের পাঁচমাইল টু গোলাবাড়ী যাওয়ার পাকা রাস্তার দক্ষিণ পাশে নিশিন্দারা গ্রামের পরিত্যক্ত ইটভাটায় মদ্যপান শেষে   ইব্রাহিমের গলায় ধারালো ব্লেড দিয়ে গলা কাটে এবং মৃত ভেবে সেখানে ফেলে রেখে মটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে জাহিদেরা চলে যায়। পরে ঘাতকেরা চলে গেলে জীবন বাঁচানোর জন্য সেখান থেকে দৌড়ে পাকা রাস্তার পাশে সোহাগ নামের এক মুদি দোকানের সামনে গিয়ে পড়ে ইব্রাহিম। তখন দোকানদার সোহাগ ইব্রাহিমের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে তার বাবার ও গাবতলী থানা পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ইব্রাহিমকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে সে মারা যায়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গাবতলী থানার পুলিশ সদস্যরা মূল আসামী জাহিদকে মঙ্গলবার সকালে নাটাইপাড়ার এক ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে ছিনতাই হওয়া মটরসাইকেলটি নাটাইপাড়া আপন গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। 
পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার সাথে জড়িত বাকিদের নাম ঠিকানা জানতে তারা কাজ করছে পাশাপাশি তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতকে আদালত সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে মর্মেও জানান এসসি সুদীপ চক্রবর্তী। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, আব্দুর রশিদ (অপরাধ), মোতাহার হোসেন (ডিএসবি), ফয়সাল মাহমুদ (সদর সার্কেল ও মিডিয়া মুখপাত্র), সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার  রাজিউর রহমান ও গাবতলী মডেল থানার অফিস ইনচার্জ জিয়া লতিফুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাইহান ওলিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে