প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২৩:২৪

মাদক সেবন করতে গিয়ে বন্ধুর লাথিতে খুন হন হুমায়ুন কবির !

দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
মাদক সেবন করতে গিয়ে বন্ধুর লাথিতে খুন হন হুমায়ুন কবির !

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় ডোবা থেকে হুমায়ুন কবির (৩০) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর নিহতের বন্ধু হারুন অর রশিদকে (৩৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে বলেছেন, অতিরিক্ত মাদক সেবন করে বেসামাল হয়ে পড়লে হুমায়ুন কবিরের পিঠে লাথি দিলে মারা যায় সে। পরে মরদেহ গুম করতে বস্তায় ভরে একাই কাঁধে করে নিহতের বাড়ির কাছে ডোবায় ফেলে দেয়। হত্যাকান্ডের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপানোর জন্য নিহতের মোবাইল ফোন দিয়ে তার পরিবারের কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে হারুন অর রশিদ। গতকাল ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার বগুড়ার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম সেবা এতথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃত হারুন অর রশিদ দুপচাঁচিয়া উপজেলার ইসলামপুর খাঁ পাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে। নিহত হুমায়ুন কবির একই গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে। তারা একে অপরের ঘনিষ্ট বন্ধু এবং দুই জনই মাদকাসক্ত ছিলেন। হারুন অর রশিদ পেশায় অটোভ্যান চালক এবং হুমায়ুন কবির কৃষি কাজ করতেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ডোবা থেকে হুমায়ুন কবিরের লাশ উদ্ধারের পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার এবং নিহতের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে রাতেই এলাকা থেকে হারুন অর রশিদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর হারুন অর রশিদ পুলিশকে জানায়, ১৮ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেলে হুমায়ুন কবির বাড়ি থেকে তার অটোভ্যান যোগে দুপচাঁচিয়া আসে। এরপর মাদকদ্রব্য কিনে তার ভ্যানেই বাড়ি ফিরে যায়। হারুন অর রশিদের বাড়িতে কেউ না থাকায় রাত ১০টার দিকে হুমায়ুন কবির তার বাড়িতে যায়। এরপর সেখানেই দুই বন্ধু মিলে বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য সেবন করে। হুমায়ুন কবির অতিরিক্ত মাদক সেবন করে বেসামাল হয়ে পড়ে। বাড়ির উঠানে টিউবওয়েল পাড়ে গিয়ে হুমায়ুন পড়ে যায়। হারুন হাত ধরে টেনে তুলতে গেলে হুমায়ুন মাতলামি শুরু করে। এসময় হারুন তার পিঠে লাথি দেয়। কিছুক্ষণ পর হুমায়ুন মারা গেলে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় লাশ এবং ৬টি ইট ভরে কাঁধে করে ডোবার পানিতে ফেলে আসে।
দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জন হাসান আলী জানান, বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বিপিএম সেবা এর দিকনির্দেশনায় ও আদমদীঘি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ এর তত্বাবধানে দুপচাঁচিয়া থানার এসআই বকুল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স সহ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হুমায়ুন কবির হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত হারুন প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। পরে তাঁকে বগুড়ার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৪ মোমিন হাসান এর সামনে হাজির করলে অভিযুক্ত আসামী ১৬৪ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। 

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে