প্রকাশিত : ৩ নভেম্বর, ২০২১ ২২:৩৪

শেরপুরে ধর্ষণ মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকী, নির্বিকার প্রশাসন!

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
শেরপুরে ধর্ষণ মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকী, নির্বিকার প্রশাসন!

বগুড়ার শেরপুরে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ব্যাপারে বাদীর পক্ষ থেকে অভিযুক্তের লোকজনের বিরুদ্ধে গত রবিবার (৩১অক্টোবর) থানায় সাধারণ ডায়েরি (নং-১৫১৯) করা হয়েছে। 

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত তিন বছর আগে উপজেলার রামনগর গ্রামের মো. আবুল খায়েরের ছেলে রিপন আহম্মেদের (২৫) সাথে দামুয়া গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে সুমনা আক্তারের মোবাইলে পরিচয় হয়। এর পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর এক পর্যায়ে রিপন আহম্মেদ বিয়ের প্রলোভন দিয়ে সুমনার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে এবং সর্বশেষ গত ২৩ জুলাই রিপন আহাম্মেদ শেরপুর শহরের ধুনট রোডস্থ তার এক দুলাভাইয়ের বাড়িতে কৌশলে ডেকে নিয়ে সুমনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক আবারও শারীরিক সম্পর্ক করে। এর পর সুমনা বিয়ের কথা বললে রিপন অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তিতে সুমনা বিয়ের দাবীতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর তার প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন। তখন এলাকার লোকজন ও রিপনের স্বজনেরা বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সুরহা করার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু ঘটনার কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সুমনা শেরপুর থানায় রিপনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। 

এদিকে মামলা করার পর পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী সুমানা আক্তার। মামলার এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে পুলিশ। এমনকি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তের পক্ষ থেকে তাকে হুমকীও প্রদর্শন করা হচ্ছে। এর প্রতিকার চেয়ে গত ২৫ অক্টোবর দুপুর ১২ টায় শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন নির্যাতিতা সুমনা। কিন্তু এর পরেও তার উপর হুমকী প্রদর্শন থেমে থাকেনি। অভিযুক্তের পক্ষে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রাতে বাড়ি গিয়েও তাকে হত্যার হুমকী দিচ্ছেন বলে তার অভিযোগ। তাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৩১ অক্টোবর সুমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। 
এদিকে পুলিশের নিরব ভূমিকা ও ন্যায় বিচার নিয়ে সন্দিহান সুমানা। তিনি বলেন, মামলা করার পরও আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাকে ধরার চেষ্টা করছে না। আবার মামলা না তুলে নিতে অভিযুক্তের পক্ষ থেকে প্রাণ নাশের হুমকী দেওয়া হচ্ছে। থানায় জিডি করার পরও পুলিশ আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। 
অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অনিহার কথা অস্বীকার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রামজীবন ভৌমিক বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অনিহার অভিযোগ সত্য নয়। অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গেছে এমন তথ্য বাদীর পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। অতিশীঘ্রই অভিযুক্তকে আটক করা হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে