প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর, ২০২১ ২০:১৭

শাজাহানপুরে শুরু হয়েছে নির্বাচনী সহিংসতা

ষ্টাফ রিপোর্টার
শাজাহানপুরে শুরু হয়েছে নির্বাচনী সহিংসতা

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্রে করে শুরু হয়েছে সহিংসতা। নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের মারপিট, হুমকি-ধামকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে নির্বাচনী এলাকা।

এসমস্ত ঘটনায় কেউ কেউ সংশ্লীষ্ট প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিলেও অনেকে ভয়ে অভিযোগ দেয়ার সাহস পাচ্ছে না।

আশেকপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (মটরসাইকেল) সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা এম ইদ্রিস আলী সাকিদার জানান, শুক্রবার দুপুরে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রতীক পাওয়ার পর রানীরহাট এলাকায় তিনি নির্বাচনী অফিস তৈরী করছিলেন। এমন সময় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ফিরোজ আলম ও তার কর্মীরা হামলা চালিয়ে তার অফিস ভাংচুর করে। কোন নির্বাচনী অফিস ও পোষ্টারও লাগাতে দেবে না বলে তারা হুমকি-ধামকি দেয়। এ ঘটনায় রিটার্নিং অফিসারকে স্বশরিরে মৌখিক ভাবে জানালে তিনি নৌকা প্রার্থীর সাথে স্বমন্বয় করে চলতে বলেছেন। 

নৌকার প্রার্থী ফিরোজ আলম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা মিথ্যা, বানোয়াট। ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে।

আশেকপুর ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির জানান, স্বতন্ত্রপ্রার্থী এম ইদ্রিস আলী মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন। তাকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।

রুহুল আমিন নামে এক বিবাহ রেজিষ্টার (কাজী) জানান, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মাঝিড়া কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ মার্কেট থেকে উপজেলার স্বেচ্ছাসেবকলীগের য্গ্মু সাধারন সম্পাদক হোসেন শরীফ মনির ও ইকবাল ফারুক সহ ৮/১০ জন তাকে গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে বলে পাশের গলির ভিতর নিয়ে যায়। সেখানে মনির তাকে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করতে হবে বলে জোরজবরদস্তি করে। একপর্যায়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করে। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 

আব্দুল মালেক নামে এক যুবক জানান, তিনি তার ফেসবুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের আনারস প্রতীকের একটি ছবি পোষ্ট করেন। সেখানে তিনি আনারস প্রতীকে ভোট চান। ফেসবুকে এই পোষ্ট দেয়ায় জানতে পেরে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার স্বেচ্ছাসেবকলীগের য্গ্মু সাধারন সম্পাদক হোসেন শরীফ মনির দলবল নিয়ে এসে তাকে ও তার বড়ভাই আব্দুর রাজ্জাকে মারধর করে এবং মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। পরে গভীর রাতে মোবাইল ফোন ফেরত দেয়। পরের দিন শনিবার সকালে আবারো ২০/২৫টি মটরসাইকেলের বহর নিয়ে এসে এনিয়ে কোন অভিযোগ করতে নিষেধ করে। অভিযোগ করলে তার ভাইয়ের দোকানে হামলা সহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দেয়।

মাহবুবুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী জানান, তার ছোটভাই ফেসবুকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আব্দুস সালাম হুজুরের আনারস প্রতীকের একটি ছবি পোষ্ট করে ছিল। এই অপরাধে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হোসেন শরীফ মনির দলবল নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখায়। পরে তার ছোটভাই ফেসবুক থেকে পোষ্ট ডিলেট করেছে।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের য্গ্মু সাধারন সম্পাদক হোসেন শরীফ মনির অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, কাউকে কোন মারধর হুমকি ধামকি দেয়া হয়নি। নৌকা প্রতীকের জোয়ার দেখে তারা বিশৃখল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনে কোন প্রকার সহিংসতা মেনে নেয়া হবে না।

রিটার্নিং অফিসার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত তার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে