প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২১ ২০:৫৪

দুপচাঁচিয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীদের নবান্ন উৎসব পালিত

দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
দুপচাঁচিয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীদের নবান্ন উৎসব পালিত

নতুন ধান্যে হবে নবান্ন- কবির এ অকাট্য বাক্যের ধারাবাহিকতায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সনাতনী পঞ্জিকা মতে বৃহস্পতিবার (অগ্রহায়ণের প্রথম দিন) সনাতন ধর্মালম্বীরা নবান্ন উৎসব পালন করেছেন। উপজেলার ফেঁপিড়া, সাবলা, গয়াবান্ধা, খানপুর, সরঞ্জাবাড়ী, কইল, আমষট্ট, মাজিন্দা, গোবিন্দপুর, ও উপজেলা সদরসহ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এ উৎসব পালনে নানা আয়োজন করে থাকেন। এদিন প্রতিটি বাড়ির আঙ্গিনায় আতপ চাল গুলিয়ে আল্পনা আঁকে, উঠান ও ধানের গোলায় গোবর গুলিয়ে লেপ দেয়। সকালে ছোট ছোট ছেলের দল স্নান (গোসল) করে নতুন ধুতি পড়ে বয়স্ক লোকদের সঙ্গে আবাদি জমিতে যায়। সেখান থেকে তিন গোছা ধান কেটে তাতে সিঁদুর, কাজলের ফোটা, কলাপাতা দিয়ে ঢেকে মাথায় করে বাড়ির আঙ্গিনায় নিয়ে আসে। এসময় গৃহবধুরা শঙ্খ বাজিয়ে উলুধ্বনি দেয়। এ ধরনের অনুষ্ঠানকে এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ে লোকজন আগকাটা (প্রথম ধান কাটা) বলে থাকেন। তারপর কাটা ধানগাছের গুচ্ছ ঘরের ছাদের তীরে আটকিয়ে রাখা হয়। এটি হিন্দু ধর্মালম্বীদের একটি ঐতিহ্য।  
উপজেলার সরঞ্জাবাড়ী গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পরিতোষ মন্ডল জানান, আবহমান কাল থেকেই সনাতন ধর্মালম্বীরা এ নবান্ন উৎসবটি ধুমধামের সাথে পালন করে আসছেন।  
এদিকে এ নবান্ন উৎসব উপলক্ষে দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরে বড় বড় মাছের মেলা বসে। সাধ্যমত লোকজন রকমারী সবজি সহ বড় বড় মাছ কিনে হরেক রকম সুস্বাদু রান্না, নতুন ধানের চালের পায়েস, পিঠা, পুলি তৈরি করে মেয়ে-জামাইসহ আত্মীয় স্বজনদের আপ্যায়ন করে থাকেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দুপচাঁচিয়া মাছ বাজারে ২০কেজি ওজনের  কাতলা মাছ বিক্রেতা ১১’শ টাকা কেজি দরে দাম হাঁকতে দেখা গেছে।
মেলায় মাছ কিনতে ব্যবসায়ী মিল্টন বসাক বলেন, এবার দুপচাঁচিয়ায় নব্বান্ন মাছের মেলায় বাঘাআইড় সহ বিভিন্ন জাতের বড় বড় মাছ উঠেছে। মাছের দামও সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। 
দুপচাঁচিয়া উপজেলা মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক আলম বলেন, প্রতি বছরই নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আমরা এখানে মাছের মেলা বসিয়ে থাকি। গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার এ মেলা বড় পরিসরে করা হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছ উঠেছে। সেই সাথে মাছের ক্রেতার ভীড়ও ছিল লক্ষ্যনীয়।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে