প্রকাশিত : ১৮ নভেম্বর, ২০২১ ২১:০৮

গাবতলীতে মুক্তিপণ না পেয়ে ৪বছরের শিশু কন্যাকে হত্যা ॥ গ্রেফতার-২

গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি
গাবতলীতে মুক্তিপণ না পেয়ে ৪বছরের
শিশু কন্যাকে হত্যা ॥ গ্রেফতার-২

বগুড়ার গাবতলীতে ৩লাখ টাকার মুক্তিপণ না পেয়ে ৪বছরের এক শিশু কন্যাকে হত্যা করেছে ২কিশোর। সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে এবং এ ঘটনায় জড়িত দুই কিশোরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। 
জানা গেছে, গাবতলীর নেপালতলী ইউনিয়নের লাঠিমারঘোন গ্রামের রাজমিস্ত্রি শাহিন প্রামানিকের ৪বছরের শিশু কন্যা সানজিদা আকতার  গত ১৭ই নভেম্বর বেলা ১১টায় নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সানজিদাকে কোথাও পাওয়া না গেলে বাড়ীর আশপাশের কয়েকটি পুকুর শ্যালো মেশিনের দ্বারা ছেছতে শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ও স্থানীয় শত শত লোকজনের সহায়তায় পুকুর-ডোবার পানিতে তন্যতন্য করে খুঁজতে শুরু করা হয়। হঠাৎ বিকেলে এক অপহরণকারী মোবাইল ফোনে জানায়, ৩লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে সানজিদাকে জীবন্ত মুক্তি দেয়া হবে-অন্যথায় কোন চালাকি করলে সানজিদাকে মেরে ফেলে দেয়া হবে। তখন মুক্তিপণের টাকা নিয়ে সানজিদার বাবার সাথে অপহরণকারীদের দর কষাকষি শুরু করা হয়। এক পর্যায়ে ৫০হাজার টাকা পেলে সানজিদাকে ছেড়ে দিতে রাজী হয় অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের ৫০হাজার টাকা রাখতে বলা হয় লাঠিমারঘোন উত্তরপাড়া এলাকার একটি ছোট্ট ব্রীজের নিচে। বিষয়টি বিকেলে পুলিশ প্রশাসনকে জানালে অপহরণকারীদেরকে ধরতে মোবাইল টেকিং শুরু করে পুলিশ। পুলিশের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাত ১০টায় অপহরণকারীদের নির্দেশিত ছোট্ট ব্রীজের নিচে মুক্তিপণের ৫০হাজার টাকা রেখে দেয় সানজিদার বাবা। তবে আগে থেকেই ব্রীজের আশপাশে ওঁত পেতে ছিলো পুলিশের একটি চৌকস দল। পনেরো বছর বয়সী রিয়াদ প্রামানিক নামের এক অপহরণকারী ওই ব্রীজের নিচে এসে মোবাইল ফোনের আলোয় মুক্তিপণের টাকা খুঁজতে থাকে। এ সময় পুলিশ চারদিক থেকে এসে রিয়াদকে পাকড়াও করে ফেলে। গ্রেফতারকৃত রিয়াদ উপজেলার লাঠিমারঘোন গ্রামের উজ্জ্বল প্রামানিকের ছেলে। এরপর রিয়াদের স্বীকারোক্তিতে অপহৃত সানজিদার বসতবাড়ীর প্রতিবেশি সাজু প্রামানিকের ছেলে আরেক অপহরণকারী শুভ প্রামানিক (১৫)কে তার নানীর বাড়ী পার্শ্ববর্তী কদমতলী গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপহরণকারী শুভ ও রিয়াদের স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী পুলিশ শুভ’র বাড়ীর ষ্টীলের বাক্সের ভিতরে রাখা একটি প্লাষ্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। সেই বস্তার ভেতরে সানজিদাকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে কসটেপ লাগানো অবস্থায় নিথর দেহ (মৃত) পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা শাহিন প্রামানিক বাদী হয়ে গতকাল মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ গ্রেফতারকৃত শুভ ও রিয়াদকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে এবং সানজিতার লাশ উদ্বার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।  

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে