প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:১০

শেরপুরে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সার চিহ্নিত

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
শেরপুরে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সার চিহ্নিত

বগুড়ার শেরপুরে ১ হাজার ৭৩ বস্তা অবৈধ সার চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দীর্ঘ অভিযানে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আকন্দ ট্রেডার্সের গোডাউন থেকে ৬৩৩ বস্তাডিএপি ও ৪৪০ বস্তা এমওপি সার চিহ্নিত হয়।

এলাকাবাসী জানান, সোমবার বেলা এসারটায় র‌্যাব ১২ এর একটি টিম ভবানীপুর বাজারে উপস্থিত হয়ে আকন্দ ট্রেডার্সে সার মজুদের ডকুমেন্টস দেখতে চায়। এসময় দোকানের মালিক কলিমউদ্দিন আকন্দ তা দেখাতে ব্যার্থ হন। ফলে র‌্যাবের টিম সার গুলিকে অবৈধ ঘোষণা করেন। এর পরে ওই দোকানের তিনটি গোডাউন থেকে উল্লেখিত পরিমাণে সারের বস্তা উদ্ধার করা হয়। এসময় শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস উপস্থিত ছিলেন। এসময় আটককৃত সার গুলো জব্দ করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিলে আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়। কারণ ইতিপূর্বে অবৈধ সার সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে কৃষি কর্মকর্তা সারগুলো বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। পরবর্তিতে সন্ধ্যায় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আটককৃত সারগুলো তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটির মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত মূল্যে স্থানীয় কৃষকদেও মাঝে বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, অভিযানের বিষয়ে আমার কাছে সঠিক কোন তথ্য ছিলনা। র‌্যাব ১২ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করেছে। আমি তাদেরকে সহযোগিতা করেছি। তবে ওই খুচরা বিক্রেতার অবৈধ মজুদ সম্পর্কে অবগত হয়ে আগে থেকেই বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। 

র‌্যাবের অভিযান সম্পর্কে আগে থেকে অবগত ছিলেন না বলে দাবি করেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি সকাল থেকেই প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বিকেলে জানতে পেওে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। আটকৃত সার জব্দের প্রক্রিয়া শুরু হলে স্থানীয় কৃষকের বাধার মুখে পড়ি। কৃষকদের আশংকা সার জব্দ করলে তারা আগামী বরো মৌসুমে ব্যপক সংকটে পড়বেন। তাদেও সুবিধার কথা চিন্তা করে সারগুলো বিক্রেতার কাছেই রাখা হয়েছে। বিক্রেতা যেন সেগুলো স্থানীয় কৃষকদেও কাছে ন্যায্য দামে বিক্রি করেন তা তদারকি করার জন্য ইউপি চেয়াম্যান, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সমন্বয়ে তিন সদস্যের একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ওই ব্যবসায়ীর গোডাউনে প্রায়ই রাতের অন্ধকারে প্রচুর পরিমাণে সার লোড-আনলোড করা হয়। আজকের এই অভিযানে মাত্র ১ হাজার ৭৩ বস্তা সার উদ্ধার হওয়ার ঘটনা বিশ্বাস যোগ্য মনে হয় না। তাছাড়া ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এতে কালো বাজারীরা উৎসাহিত হবে বলে তার অভিমত।

অবৈধভাবে সার মজুদকারির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করার প্রসঙ্গে ইউএনও চাঁদনী বাজার কে জানান, স্থানীয় কৃষকদের কথা চিন্তা করেই আমার সুষ্ঠুভাবে সার বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তবে ভবিষ্যতে আর কেউ যেন এধরণের কাজ করতে না পারে এ বিষয়ে আমরা আরও তৎপর হবো।

উল্লেখ্য সার ব্যবস্থাপনা আইন-২০০৬ অনুযায়ী নিবন্ধন ছাড়া বা অবৈধভাবে সার  আমদানি, সংরক্ষণ, বিতরণ বিপণন, পরিবহন বা বিক্রি করলে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে