প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারী, ২০২২ ২৩:২৪
দুপচাঁচিয়ায় পৌষ পার্বণ উপলক্ষে সন্ন্যাস পূজা অনুষ্ঠিত
দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় সনাতন ধর্মালম্বীর লোকেরা পৌষ পার্বণ উৎসব পালন করেছে। গতকাল শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় লোকজ এ উৎসবটি পালিত হয়।
জানাযায়, আবহমান কালধরে গ্রাম বাংলার এ ঐতিহ্যের উৎসবটি প্রতি বছরই সনাতন ধর্মালম্বীরা পালন করে। এ উপলক্ষে সনাতনী পঞ্জিকা মতে বাংলা সনের পৌষ মাসের শেষ দিন অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তিতে পৌষ পার্বণ উৎসবটি পালিত হয়। এর আগের দিন রাতে বাড়ির আঙ্গিনায় ও ঘরের মেঝেতে আতপ চালের গুড়া গুলিয়ে আল্পনা আঁকা হয়। সেই সঙ্গে শোলার তৈরি কদম সদৃস্য ফুল ও মালা ঘরের দরজায়, চালের ডাবরে, গরুর শিং সহ কুলা, চালন ও ডালাতে বেঁধে দেয়া হয়। এছাড়াও রকমারি পিঠা, পুলি ও পায়েস তৈরি করা হয়। পরের দিন ভোরে শিশু হতে শুরু করে বয়স্ক নারী-পুরুষরা স্নান করে খড়ের গুচ্ছে আগুন লাগিয়ে তাপ গ্রহণ করে। সেই সঙ্গে নগর কীর্তণ পরিবেশিত হয়। পরে আত্মীয়-স্বজনদের পিঠা-পায়েস আপ্যায়ণ করা হয়। এটি তাদের লৌকিক ঐতিহ্যের প্রতীক। পৌষ পার্বণ উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে মেলাও বসে।
এ পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে উপজেলার তালোড়া ইউনিয়নের কইল গ্রামে প্রতি বছরের ন্যায় সন্ন্যাসের পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, তাদের বাব-দাদার আমল থেকে এই স্থানে এ সন্ন্যাসের পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ পূজাকে ঘিরে স্থানীয়রা ছাড়াও দূর দূরান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ হিন্দু নর-নারী এ সন্ন্যাস পূজায় উপস্থিত হন। অনেকে সন্ন্যাস দেবের নিকট মানত করে তাদের আশা পূরণ হওয়ায় ফল মুল সহ অনেকে মাটির তৈরি সন্ন্যাস দেবের মূর্তি এ মন্ডপে আনেন।এ সন্ন্যাসতলায় সন্ন্যাস পূজা শেষে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
কথা হয়, বগুড়া জেলা শহরের বাসিন্দা ডলি রানী দাসের সঙ্গে। তিনি জানান, এ সন্ন্যাস দেবের নিকট তিনি মানত করেছিলেন । আশা পূর্ণ হওয়ায় তিনি সন্ন্যাস দেবের মাটির মূর্তি এ সন্ন্যাস পূজার মন্ডপে দিয়েছেন।
কইল সন্ন্যাস পূজা মন্ডপ কমিটির সভাপতি মদন কুমার প্রাং জানান, অনেক বছর ধরেই এ স্থানে সন্ন্যাস পূজা হয়ে আসছে। তবে প্রায় ৩০ বছর ধরে এ পূজায় ভক্তদের সমাগম বেশি হয়।
এ মন্ডপের সাবেক সভাপতি কালীপদ দেব বলেন, পৌষ সংক্রান্তি তিথিতে দীর্ঘ দিন ধরে এ সন্ন্যাস পূজা হয়ে আসলেও এ স্থানে পূজার সময় পানীয় জল সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধার করা গেলে আগত ভক্তরা উপকৃত হতো।
তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সামছুল ইসলাম বলেন, কইল গ্রামের সন্ন্যাসতলীর ঐতিহ্য দীর্ঘ দিনের। শুধু পূজা নয়, সকল ভালো কাজে আমার সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন