দুপচাঁচিয়ায় সরিষার মধু সংগ্রহে ব্যস্ত ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষীরা

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মাঠ জুড়ে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দেখে যেন মনে হয় মাঠ জুড়ে প্রকৃতি নতুন সাজে সেজেছে। হলুদ এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরে উঠে মন। আর সরিষা চাষের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষীদের তৎপরতা। একদিকে সরিষা যেমন দিচ্ছে তেল সঙ্গে দিচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এছাড়াও সরিষা চাষে রয়েছে দ্বিগুন লাভ। কেননা অন্য ফসলের চেয়ে সরিষা চাষে পরিশ্রম তুলনামূলক কম। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বেশ কিছু এলাকায় ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষীরা বিভিন্ন জেলা হতে এসে ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স রেখে বিশেষ কৌশলে মধু সংগ্রহ করছেন।
কথা হয় মৌ চাষী সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ার বাসিন্দা সোলেমান আলী। তিনি জানান, বছরে প্রায় ৮/৯মাস তারা বিভিন্ন ফুল ও ফসল হতে মধু সংগ্রহ করেন। দুপচাঁচিয়ায় তিনি সম্প্রতি এসেছেন সরিষা হতে মধু সংগ্রহ করতে। এজন্য সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স রেখেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাক্সগুলো খুলে দেন। এসময় মৌ মাছিরা সরিষার ক্ষেতে চলে যায়, সন্ধ্যার পূর্বেই আবার ওই বাক্সগুলোতে মৌমাছি প্রবেশ করে। এ প্রক্রিয়ায় সাত দিন পরপর ওই বাক্সগুলোর ভিতরে রাখা চাক হতে মধু সংগ্রহ করেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে ১’শ ৭৫টি বাক্সের চাকে প্রায় ৬মণ মধু সংগ্রহ হয়ে থাকে। খুচরা ৩’শ টাকা কেজি ও পাইকারী ২’শ ২৫টাকা কেজি দরে মধু বেচা-কেনা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলা শহর হতে পাইকাররা এসে এসব মধু নিয়ে যান।
এদিকে দুপচাঁচিয়া উপজেলায় কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ডাল, তেল, মসলা, বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বেশ কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষী রয়েছেন। তাঁদেরই মধ্যে একজন উপজেলার ছাতিয়াগাড়ী গ্রামের বাসিন্দা জাহেদুল ইসলাম। তিনি এই প্রথম ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষের মাধ্যমে সরিষা হতে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন। এ প্রকল্প হতে তাঁকে মৌমাছির বাক্সও দেয়া হয়েছে। একান্ত আলাপ চারিতায় জাহেদুল বলেন, প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি এই প্রথম মধু সংগ্রহ করছেন। তার ধারণা তিনি এ ব্যবসায় লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাজেদুল আলম জানান, সরিষার ক্ষেত হতে মৌ খামারিরা মধু সংগ্রহ করায় পরাগায়ণ সঠিক হওয়ায় সরিষা উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এবার দুপচাঁচিয়ায় ৩হাজার ৩’শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সরিষার আবাদ ভালো হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন