প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারী, ২০২২ ২৩:১৬

ধুনটে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধ মেলায় লাখো মানুষের সমাগম!

রমরমা চলছে জুয়ার আসরও
ইমরান হোসেন ইমন, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি :
ধুনটে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধ
মেলায় লাখো মানুষের সমাগম!

সারাদেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। কিন্তু বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সরকারি নির্দেশনা বা এসব বিধি-নিষেধ অমান্য করে অবৈধভাবে মেলা লাগানো হয়েছে। প্রায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে ওই মেলায়। মেলার প্রতিটি স্টল ঘর বা দোকানঘর থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও তো মেলায় চলছে রমরমা জুয়ার আসর। বুধবার সন্ধ্যায় সরেজমিন ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের কাদাই গ্রামের অবৈধ মেলায় গিয়ে এসব দৃশ্য দেখা যায়।

জানাগেছে, সারাদেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকারি-বেসরকারি স্কুল কলেজ, কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা এবং জনসমাগম সময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সরকারি এসব নির্দেশনা অমান্য করে বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন শিপন ও সাবেক চেয়ারম্যান হারেজ উদ্দিন আকন্দের নেতৃত্বে গোফফর, মিলন, রনি সহ আরো কয়েক ব্যক্তি কাদাই গ্রামের দাখিল মাদ্রাসার সামনে বিশাল ময়দানে তিনদিন ব্যাপি মেলার আয়োজন করেছেন। মেলায় প্রায় ৫ শতাধিকেরও বেশি স্টলঘর ও দোকান নির্মান করা হয়েছে। 

বুধবার সকাল থেকে কাদাই মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা সহ লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। তবে মেলায় আগতদের স্বাস্থ্যবিধি মানা তো দূরের কথা কারো মুখে মাস্কও ছিল না। গাঁদাগাদি করে সবাই মেলায় যাওয়া-আসা করছেন। এছাড়াও মেলার পাশ^বর্তী কয়েকটি স্থানে এবং কয়েক বাড়িতে জুয়া আসরও চলছিল রমরমা। দূর দূরান্ত থেকে মানুষেরা জুয়া খেলতে মেলায় আসছেন। 

কাদাই গ্রামের শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, যেখানে সারাদেশে স্কুল-কলেজ, কোচিং সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রকাশ্যে মেলা চললেও প্রশাসন নির্বিকার রয়েছে।

কাদাই গ্রামের আজিজার রহমান জানান, মূলত জুয়ার জন্যই বিখ্যাত এই কাদাই মেলাটি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে প্রতি বছর ধুনট উপজেলা থেকে মেলাটির দরপত্র আহবান করা হলেও এবছর করোনার কারনে কোন দরপত্র আহবান করা হয়নি। তাই এবছর সবাইকে ম্যানেজ করে নিয়েই বর্তমান চেয়ারম্যান শিপন ও সাবেক চেয়ারম্যান হারেজের নেতৃত্বে এলাকার লোকজন মেলাটি লাগিয়েছেন। তবে মেলা থেকে চাঁদা আদায় করা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। তারা প্রতিটি দোকানঘর ২০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছেন। এছাড়াও জুয়ার আসর থেকেও আদায় হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা। 

এব্যাপারে ধুনট থানার অফিসার (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, মঙ্গলবার সংবাদ শুনে সেখানে গিয়ে মেলা লাগাতে বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। এব্যাপারে আবারো পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তবে এব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, প্রতি বছর মেলার দরপত্র আহবান করা হলেও এবছর করোনার কারনে তা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু তারপরও যদি কেউ অনুমোদন বিহীন এবং সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মেলা লাগায় তাহলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে