শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের চেয়েও জরুরী নাগরিক দায়িত্ব পালন- সুফিয়া নাজিম

পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক (উপ-সচিব) সুফিয়া নাজিম বলেছেন, পরিবেশ রক্ষায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সকলের নিজ নিজ অবস্থানে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই। পরিবহন চালকসহ সাধারণ মানুষদের শুধুমাত্র সদিচ্ছা ও আত্মসচেতনতা আনতে পারবে এক বিশাল ইতিবাচক পরিবর্তন। তিনি বলেন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন অনুযায়ী শাস্তির বিধানও রয়েছে। যা প্রথমবারের অপরাধে ১ মাস জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং দ্বিতীয়বার একই অপরাধ হলে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং সর্বোচ্চ ৬ মাস জেলের বিধান রয়েছে। কিন্তু শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের চেয়েও জরুরী নাগরিক দায়িত্ব পালন যার উপযুক্ত সময় এখনই।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে শনিবার বগুড়ায় শহরের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১’শ জন পরিবহন চালক/শ্রমিক ও কারখানা শ্রমিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণে সুফিয়া নাজিম উপরোক্ত কথাগুলি বলেন।
প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি বগুড়া জেলা প্রশাসক মো: জিয়াউল হকের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম আলী বেগ। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ শফিউল আজম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালাহ্উদ্দিন আহমেদ এবং জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আলী হায়দার চৌধুরী। সভায় ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মেজবাবুল আলম এবং প্রশিক্ষণে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবহন চালক/শ্রমিকদের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেন বিআরটিএ বগুড়া সার্কেলের সহকারী পরিচালক এ.টি.এম ময়নুল হাসান। সভায় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বক্তারা তাদের বক্তব্যে অযথা যত্রতত্র উচ্চশব্দে মাইক বাজানো, অনুমতি ছাড়া প্রচার মাইক নিয়ে শহরজুড়ে ঘোরা, গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন উৎসব উদযাপনের নামে উচ্চশব্দে সাউন্ড সিস্টেম বাজানোসহ হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার নিষিদ্ধের বিষয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তবে উক্ত অনুষ্ঠানে বগুড়ার মতো এমন ব্যস্ততম শহরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ দপ্তরের পক্ষ থেকে আগামীতে নানাবিধ ইতিবাচক উদ্যোগ পরিচালনার কথাও বলা হয়। উল্লেখ্য, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের জানুয়ারী-২০২০ থেকে ডিসেম্বর-২০২২ মেয়াদে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমুলক প্রকল্পের আওতায় পরিবেশ অধিদপ্তর দেশের ৬৪টি জেলাতেই শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে শিক্ষার্থী, পরিবহন চালক/শ্রমিক, কারখানা ও নির্মাণ শ্রমিক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, ইমাম, শিক্ষক ও এনজিও প্রতিনিধিসহ সকল শ্রেণীপেশার মানুষকে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ নানাবিধ কর্মসূচি পরিচালনা করছে যাতে দিনশেষে অবশ্যই একটি ইতিবাচক সফলতা আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন