কাজিপুরের তেকানি ইউপিতে ভিজিডির খাদ্য বিতরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের তেকানি ইউনিয়নে দুঃস্থ মহিলা উন্নয়ন (ভারনারেবল গ্ৰুপ ডেভলপমেন্ট-ভিজিডি) প্রকল্পের আওতায় ১ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ চক্রের ফেব্রুয়ারি -২০২২ মাসের খাদ্য বিতরণে উপকারভোগীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ মার্চ ১৮২ জন সুবিধাভোগীর মাঝে খাদ্য সুবিধা হিসেবে ৩০ কেজি হারে চাউল বিতরণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও চকিদারের যোগসাজশে এবং ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে এই অর্থ আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের জুমারখুকশিয়া গ্ৰামের ভিজিডি কার্ডধারী ফারজানা, সুমি, আছিয়া, বুলবুলি এবং ১ নং ওয়ার্ডের মাসুদাসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের ভিজিডি সুবিধাভোগীরা জানান খাদ্য বিতরণের আগের দিন প্রতি বাড়িতে ইউপি চেয়ারম্যান চকিদার পাঠিয়ে ২০০ টাকা সঞ্চয় এবং অতিরিক্ত ৫০ টাকাসহ খাদ্য সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী অতিরিক্ত টাকা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বারদের প্রদান করে তারা খাদ্য সংগ্রহ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে তেকানি ইউপি চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ অতিরিক্ত টাকা আদায়ের স্বীকারোক্তিসহ জানান, এবার ভিজিডি'র জন্য বরাদ্দকৃত চাউল কাজিপুর এল এস ডি গোডাউন থেকে নদীপথে চরাঞ্চলে এনে বিতরণ করতে হয়েছে, অতিরিক্ত খরচ মেটাতে কার্ড প্রতি ৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবীব জানান তার প্রতিনিধি খাদ্য বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা ভিজিডি কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা চিত্রা রানী সাহা জানান, সরকারের সর্বোচ্চ নজরদারিতে পরিচালিত ভিজিডির খাদ্য বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সুযোগ নেই।
গত মার্চ মাসের উপজেলা সমন্বয় মিটিংয়ে সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের অবগত করা হয় যে ভিজিডির জন্য পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ চাউল নির্ধারিত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করতে না পারায় ইউনিয়ন পরিষদে চাউল পৌঁছান সম্ভব নয়। এ কিস্তিতে সাধারণ চাউল এল এস ডি গোডাউন থেকে যথাযথ নিয়মে সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ইউপিতে বিতরণ করতে হবে এবং এর জন্য অতিরিক্ত খরচ সরকারি নিয়মে পরিশোধের নিশ্চয়তা দেয়া আছে।
উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি ও ইউএনও জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের ভিজিডি কর্মসূচি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ধীন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে থাকে। এর আওতায় সুবিধা পেতে কাজিপুর উপজেলার প্রায় ৭ হাজার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দুঃস্থ অসহায় নারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫৪১ জন সুবিধা পেয়ে আসছেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন