ধুনটে ১০ লাখ টাকায় স্কুল মাঠে দোকান বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক
বগুড়ার ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী এ,এ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের মধ্যে দোকান ঘর বরাদ্দ দিয়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান। শুক্রবার (১৩ মে) বিকেলে জনরোষানলের পর ইউএনও’র অভিযানে স্কুল মাঠের সেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকালে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য।
তবে শুধু এই দুটি দোকানঘরের পজিশন বরাদ্দ দিয়েই নয়, ওই স্কুল মাঠের জায়গায় ২১টি দোকানঘর বরাদ্দ দিয়ে কয়েক বছরে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান।
জানাগেছে, ধুনট উপজেলার যমুনার ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ১৯১৮ সালে গোসাইবাড়ী এ,এ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির পূর্ব পাশের্^ই রয়েছে বিশাল একটি খেলার মাঠ। কিন্তু ধীরে ধীরে অবৈধ স্থাপন নির্মানের ফলে ওই বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটিও সংকুচিত হয়ে আসছে।
গত বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাতে গোসাইবাড়ী ফকিরপাড়া এলাকার মোজাফফর রহমানের ছেলে ফজলুর রহমান ওই স্কুল সমানের মাঠের সামনেই টিনের তৈরী দুটি দোকারঘর নির্মান করেন।
এদিকে স্কুল মাঠে অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মান করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। শুক্রবার (১৩) বিকেলে সংবাদ পেয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরকতউল্লাহ ফোর্স নিয়ে সেখানে গেলে জনরোষানলে পড়েন তারা। একপর্যায়ে জনরোষানলে পড়ে ইউএনও’র নিদের্শনায় এই অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়া হয়।
এব্যাপারে দোকান মালিক ফজলুর রহমান ইউএনও’র উপস্থিতিতেই বলেন, প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমানকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে দুটি দোকানের পজিশন বরাদ্দ নিয়েছেন। কিন্তু ইউএনও দোকান ভেঙ্গে দেওয়ায় প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি উল্টো তাকেই মারধরের চেষ্টা করেন। এবিষয়ে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান এই ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী।
তবে শুধু ফজলুর রহমানের কাছ থেকেই অর্থ হাতিয়ে নেনিনি, তার মতো জাহাঙ্গীর, মুকুলসহ প্রায় ২১টি দোকান মালিকের কাছ থেকেই গত কয়েক বছরে অবৈধ স্থাপনার জন্য কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও এসব অবৈধ স্থাপনা থেকে মাসিক দোকান ভাড়াও নিজ পকেটে ভরের তিনি।
তবে এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ি এই সব দোকানঘরের পজিশন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে এজন্য কারো থেকে কোন অর্থ নেয়া হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
এব্যাপারে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার বলেন, স্কুল মাঠে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করায় তা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এছাড়া অবশিষ্ট অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্যও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন