প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২২ ২১:৫৬

দুপচাঁচিয়ায় চড়ক খেলা অনুষ্ঠিত

দুপচাঁচিয়া(বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
দুপচাঁচিয়ায় চড়ক খেলা অনুষ্ঠিত
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া ইউনিয়নের ফেঁপিড়া গ্রামে সোমবার বিকালে চড়ক খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামীণ লোকজ এ উৎসবকে কেন্দ্র করে এদিন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ আশ পাশের গ্রাম থেকে বিপুল সংখ্যাক নরনারী উপস্থিত ছিলেন। ফেঁপিড়া জুনিয়র কল্যাণ সমিতির আয়োজনে এ চড়ক খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 
এ চড়ক খেলার আয়োজকরা জনান, এ উপলক্ষে সনাতনী পঞ্জিকা মতে শুভ দিন দেখে একটি নির্দিষ্ট দিন শনিবার অথবা মঙ্গলবার মঙ্গল ঘট স্থাপন করা হয়। ঘট স্থাপনের ৬দিন পর ভরণ পূজা শুরু হয়। এই ৬দিন সন্ধ্যায় বিভিন্ন দেব-দেবীর বন্দনা করা হয়। ৮দিনের মাথায় দেবী কালীর মুখাকৃতি কাঠের তৈরী চামুন্ডা মুখে বেঁধে ঢাক বাজিয়ে খেলা করা হয়। এ খেলাকে শ্মশান খেলা বলে। ১০দিনের মাথায় দুপুর থেকে সনাতন ধর্মালম্বীদের পৌরাণিক কাহিনীর আদলে সেজে ছেলেরা খেলা করে। বিকালে সন্যাসীর পিঠে লোহার তৈরী কাঁটা(বর্শি) ফুঁড়ে গাছের মাথায় বাঁশ দিয়ে রশির মাধ্যমে ঘোরানো হয়।  এ খেলাকে চড়ক খেলা বলে। এবার জয়পুরহাটের সন্যাসী লক্ষণ চন্দ্র দাস এ চড়ক খেলা দেখিয়ে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। 
এ খেলা উপলক্ষে আগত সন্যাসী আদমদীঘির মদন মোহন বিশ্বাস জানান, এ চড়ক পূজা করতে হলে শিব, কালী সহ বিভিন্ন দেবীর বন্দনা করতে হয়। আর চড়ক খেলায় এসব দেবতার আর্শিবাদের পাশাপাশি তন্ত্রমন্ত্রের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। 
ফেঁপিড়া জুনিয়র কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা শ্রী চরণ দাস জানান, এক সময় ছিল যখন হিন্দু বসতি এলাকায় এ ভরণ বা বানবত্র পূজা  উপলক্ষে চড়ক খেলা অনুষ্ঠিত হতো। খেলা উপলক্ষে ওই এলাকায় মেলাও বসত। কিন্তু বর্তমানে এ চড়ক খেলা সহ মেলাও অনেকাংশে কমে গেছে। 
ফেঁপিড়া গ্রামের  প্রবীণ ব্যক্তি ধীরেন্দ্রনাথ দাস বলেন, এখন গ্রামাঞ্চলে সনাতন ধর্মালম্বীদের লোকজ উৎসব হারিয়ে যেতে বসেছে। তার পরেও যে এ ধরনের চড়ক খেলা সহ ভরণ পূজা কিছুটা হলেও গ্রামের লোকজ ঐতিহ্যকে বজায় রেখেছে। 
মেলায় উপস্থিত তালোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মেহেরুল ইসলাম জানান, ফেঁপিড়া গ্রামে বেশ কয়েক বছর ধরে চড়ক খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেখে খুব ভালো লাগলো। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে সকল ধর্মের মানুষের ধর্মীয় উৎসব সহ আনুসাঙ্গিক কর্মকান্ডে তার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
 
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন  
উপরে