প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২২ ২২:০৩

খামারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
খামারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

দশটিরও বেশি অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে বগুড়ার শেরপুরের খামারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিনের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা. হাবিবা আক্তার শিউলি বাদি হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। রবিবার (১২জুন) এই অভিযোগটি দায়ের করা হয়। একই রাস্তার দুইটি প্রকল্প, রাস্তা পাকাকরণের কথা বলে ইট তুলে আত্মসাৎ, প্রকল্পের কাজ না করে টাকা উত্তোলন, উদ্যোক্তাকে বিনা কারণে বাদ দিয়ে নিজের শ্যালক কে নিয়োগ দেয়া, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিন চেযারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার মাত্র ৭ মাসের মধ্যেই ২০২১-২২ অর্থ বছরের টি আর কাবিখা প্রকল্পের বিশেষ বরাদ্দ নিয়ে পারভবানীপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহর বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত ইটের সোলিংয়ের কাজ করলেও একই অর্থ বছরে ওই রাস্তা দেখিয়ে বগুড়া জেলা পরিষদ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে কাজ না করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। রাস্তা পাকাকরণের মিথ্যা আশ^াস দিয়ে শুভগাছা-বেড়েরবাড়ি রাস্তার শুভগাছ জাঙ্গালপাড়া এলাকার ৪শ মিটার রাস্তার ইট তুলে নিয়ে পারভবানীপুর আব্দুল্লাহ বিন ফয়েজ ঈদগাহ মাঠের রাস্তার সোলিংয়ের কাজ করেন। অথচ ওই কাজের জন্য কাবিটার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। ২০২১-২২ বছরের অর্থ বছরের ৩য় পর্যায়ের টিআর প্রকল্পের বোয়ালমাড়ি গ্রামে তিনমাথা গোল চত্বর নির্মান না করে ৫৬ হাজার ৩শ ৪৩ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের ১% বরাদ্দ থেকে ২ লাখ টাকা দিয়ে খেলাধুলা সামগ্রী ক্রয় করার কথা থাকলেও ৫৬টি ফুটবল ক্রয় করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লাবে ১ টি করে ফুটবল দিয়ে ফাকা মাস্টাররোলে স্বাক্ষর নিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার, ইউনিয়ন পরিষদ সংস্কার বাবদ ৭ লাখ ১৬ হাজার ৮শ টাকা বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে কোন মিল নেই। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে অতিরিক্ত ৪শ থেকে ৫শ টাকা আদায় করলেও সরকারি কোষাগারে জমা দেননি।
এছাড়াও নাজমুল ইসলাম ২০১০ সাল থেকে ওই ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টারে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করা অবস্থায় চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিন তাকে ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদান করে অফিস থেকে বের করে দিয়ে নিজের কাঙ্খিত লাভের আশায় শেরপুর পৌর শহর থেকে তার অদক্ষ শ্যালক মো. মাসুদ করিমকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ দেন। যার ফলে নাজমুল ইসলাম স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এদিকে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর(ইজিপিপি) শ্রমিক নিয়োগে দরিদ্র শ্রমিকদের বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান তার বাড়ির ৩ জন কাজের লোক কে নিয়োগ দিয়েছেন। ইউনিয়নের সকল কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের কাজ শ্রমিকদের দিয়ে করার কথা থাকলেও অতিরিক্ত মুনাফার আশায় স্কেভেটর মেশিন দ্বারা প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছেন। ফলে দরিদ্র কর্মজীবি মানুষের কর্মহীন হলেও চেয়ারম্যানের পকেট ঠিকই ভারি হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়নে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিতে জড়িয়ে পরেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে খামারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিন সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রনোদিত।

এ ব্যাপারে বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হকের মোবাইলে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন 

উপরে