প্রকাশিত : ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০১:২৭

বগুড়ায় জমি নিয়ে বিরোধে মারপিট লুটপাট: প্রধান ২ আসামী কারাগারে

ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় জমি নিয়ে বিরোধে মারপিট
লুটপাট: প্রধান ২ আসামী কারাগারে

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বাটদিঘী মধ্যপাড়া এলাকায় দিনেদুপুরে জমি নিয়ে বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে সারোয়ার হোসেনের বসত বাড়িতে ঢুকে খেঁটে খাওয়া নিরীহ মানুষদের বেধরক মারপিট ও লুটপাটের মামলায় প্রধান দুই আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

সোমবার বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ (নন্দ্রীগ্রাম) এ হামলার ঘটনার প্রায় ১৫দিন পর এজাহারের প্রধান ২ আসামী বাটদিঘী মধ্যপাড়া এলাকার আঃ রহমানের ছেলে আবু নোমান (৩২) এবং দেওগ্রাম এর মৃতঃ আঃ জব্বার এর ছেলে আব্দুল জলিল (৪৮) জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন। বুধবার সকালে আদালত সূত্রে তথ্যটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। 
গত ২৩শে আগস্ট নন্দীগ্রাম থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে এইমাসের ১৬ তারিখে আনুমানিক বিকেল ৫টায় বাটদিঘী মধ্যপাড়া এলাকার সারোয়ার হোসেনের বাড়িতে আবু নোমান ও জলিলের নেতৃত্বে ১০ জন ব্যক্তি সংঘবদ্ধভাবে লাঠিসোটা, লোহার রড, হাসুয়া, বাঁশসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। যাদের আকস্মিক হামলায় ভুক্তভোগী পরিবারের অনেক সদস্য মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয় যার মাঝে বাদী সারোয়ারের বাবার ডান গালে চোখের নিচে হাসুয়ার দ্বারা আঘাতে গভীরভাবে কেটে জখম হয়। এছাড়াও বাদীর চাচাকে মেরে বিবাদীরা দাঁত ভেঙ্গে দেয়াসহ নানাভাবে আহত করে। এছাড়াও বাড়ির নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানীসহ বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর চালায় দীর্ঘসময় ধরে এবং যাওয়ার সময় প্রায় লাখ টাকার সোনার গহনা নিয়ে যায় বিবাদীরা।
এ ঘটনায় হামলার দিনই ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সারোয়ার হোসেন নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত এজাহার দেন। এজাহারে আবু নোমান ও জলিল ছাড়াও আসামী করা হয়েছে আরও ৮ জনকে যারা হলেন, বাটদিঘী মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা পর্যায়ক্রমে আবু রায়হান (৩৪), আব্দুল লতিফ (৪৫), ফরিদ উদ্দিন (৫৫), রফিকুল ইসলাম (৪৮), রেজাউল করিম (৩৮), আব্দুর রহমান (৬১) ও ফজলু রহমান (৫৭) এবং ভাদরা (নিশিন্দারা) এলাকার হুমায়ুন কবির (২৬)।
এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, গত ১৬ তারিখে বাদীর এজাহার প্রাপ্তির পর তা তদন্ত করে গত ২৩শে আগস্ট থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে এই হামলা হয়েছে মর্মে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। উক্ত মামলার বিষদ তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে থানার এসআই বিকাশ চক্রবর্তী কে। তিনি আরো জানান, এজাহারের ১ ও ২নং বিবাদীর জামিন নামঞ্জুর হয়ে বর্তমানে তারা কারাগারে এবং বাকিরা জামিনে আছেন মর্মে জানেন তিনি। তিনি বলেন, নন্দীগ্রামে সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করা হবেনা। তিনি বলেন জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের জন্যে ন্যায় ও স্বচ্ছ পুলিশিং কার্যক্রম বাস্তবায়নে তারা বদ্ধপরিকর।
এদিকে বুধবার মুঠোফোনে মামলার বাদী সারোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিবাদীরা কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই শুধুমাত্র গায়ের জোরে এবং বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগদখলের অপপ্রয়াস করে যাচ্ছে। এর আগেও তাদের বারংবার নির্যাতন করেছে বিবাদীরা। কিন্তু এবারের নির্যাতন ছিল ভয়াবহ যে আতঙ্ক থেকে তারা আজও বের হতে পারেননি। তিনি এজাহারের সকল বিবাদীর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন এবং তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুনজর কামনা করেছেন।

  দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে