প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:১৯

কাউনিয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে

মোবাইল ফোনের আশক্তি বেশী শিক্ষা বিমুখ করছে
সারওয়ার আলম মুকুল, কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
কাউনিয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমছে

মহামারি করোনার ধকল কেটে যাওয়ার পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি হতাশাব্যঞ্জক। শিক্ষার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত সচেতন অভিভাবক মহল। দুই তিন দফায় করোনার কারনে শিক্ষায় ঘটেছে নানা ছন্দপতন। জীবিকার কারনে অনেক শিক্ষার্থী হয়েছে কর্মমুখী। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে না পারলে সামাজিক সংকট বৃদ্ধির শঙ্কায় শিক্ষকরা। 
সরজমিনে কাউনিয়া উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুসন্ধান করে জানা গেছে ঝরে পড়ার পাশাপাশি কমে যাচ্ছে শিক্ষার গুনগত মান। এতে শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। একসময় শিক্ষার্থীদের পদচারনায় মুখর থাকতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর ক্যাম্পাস। সেখানে এখন সুনশান নীরবতা। ফলে ফাঁকা পড়ে থাকে শ্রেনী কক্ষ গুলো। উপজেলার বেশিরভাগ কলেজের চিত্রই এমনটা দেখা গেছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, তাদের জন্য প্রথম ধাক্কা ছিলো করোনা মহামারি। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার প্রভাব পড়েছে স্বাভাবিক শিক্ষা জীবনেও। কমেছে ক্লাসে যাওয়ার অভ্যাস। সহপাঠীদের অনুপস্থিতিতে বিষণ্ণ উপস্থিত শিক্ষার্থীরাও। উপস্থিতি কম থাকায় ক্লাসে আগ্রহ হারাচ্ছে তারাও। সেই সাথে কমেছে শিক্ষার মানও। করোনা কালে বেশীরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেয়ে শিক্ষার্থীর বাল্য বিয়ে হয়েগেছে। ছেলেরা কাজের সন্ধানে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী কমে গেছে। বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে কোচিং মুখি বেশী, সেই সাথে মোবাইল ফোন আরও বেশী শিক্ষা বিমুখ করছে। মোবাইলের ভাল দিকের চেয়ে খারাপ দিকটির দিকে আগ্রহ বেশী ছাত্র-ছাত্রী এমনকি শিক্ষকদেরও। মাদকের নেশার চেয়ে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে মোবাইল আশক্তি। অভিভাবকরা জানান, মোবাইল আশক্তি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিমুখ করেছে বেশী। অনেক অভিভাবক বলছেন আগের শিক্ষা পদ্ধতিই ভাল ছিল, সৃজনশিলের নামে এখন আর ছেলে-মেয়েরা পড়া লেখাই করতে চায় না। দীর্ঘ সময় মোবাইল ব্যবহারের ফলে ছেলে মেয়েদের মেজাজ হয়ে যাচ্ছে খিটখিটে। পড়া লেথার কথা বলেই রেগে যাচ্ছে তারা। এক শিক্ষিকা বলেন, আমার মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে, তাকে বললাম ডাক্তারী পড়েতে মেয়ে বলল না, আমি বিদেশে পিএইসডি করবো, এদেশের শিক্ষা শেষে ভালো কিছু করার সুযোগ নেই। এক কলেজ শিক্ষক জানান, ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজে আসেনা, ফোন করেও তাদের প্রতিষ্ঠানে আনা যাচ্ছে না, আমরা কি করবো। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তো তাদের ডেকে আনতে পারিনা। তথ্যমতে কাউনিয়ায় কলেজের সংখ্যা ১১টি, সরকারি ১টি, মাদ্রাসা ১৭টি, মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৮টি, প্রাথমিক বিদ্যায়ল ১১৭টি, শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৫০হাজার। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, শিক্ষা ব্যবস্থার পঠন পদ্ধতি ও মান বাড়াতে হবে। তারা চেষ্টা করছেন শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান মুখি করতে।

  দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে