প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:৪৯

‘ডিবি পরিচয়ে’ তুলে নিয়ে ৮ লাখ টাকা ছিনতাই, গ্রেফতার ৬

অনলাইন ডেস্ক
‘ডিবি পরিচয়ে’ তুলে নিয়ে ৮ লাখ টাকা ছিনতাই, গ্রেফতার ৬

গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতিতে জড়িত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত তিনদিন ভোলা, ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত কিছু সরঞ্জামও জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী এ নিশ্চিত করেন।

ডাকাতচক্রটি সর্বশেষ গত ২৫ আগস্ট পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার মোবারকপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির আট লাখ টাকা ডাকাতি করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ২৬ আগস্ট আমিনপুর থানায় একটি মামলা করেন।

গ্রেফতাররা হলেন- সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার দহকোলা গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে মাসুদ করিম (৪৭), একই থানার বড় পাঙ্গাসী মধ্যপাড়া এলাকার মৃত সাবের প্রামাণিকের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ (৩২), প্রামাণিকপাড়া এলাকার আব্দুল কাদের প্রামাণিকের ছেলে মাসুদ রানা (২৯), চর আঙ্গারু গ্রামের আব্দুর শুকুর মিয়ার ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৮) শাহজাদপুর থানার পশ্চিমপাড়া এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে আরিফ (৩৩) ও ভোলার দুলারহাট থানার নুরাবাদ গ্রামের মৃত আহম্মেদের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩৫)।

পাবনার ডিবি পুলিশের ওসি মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন মামলার বরাত দিয়ে জানান, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম ২৫ আগস্ট বেলা পৌনে ১১টার দিকে জনতা ব্যাংকের কাশীনাথপুর শাখা থেকে সাত লাখ ৯০ হাজার টাকা তোলেন। তার কাছে থাকা আরও ১৫ হাজারসহ মোট আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

তিনি জানান, পথে আমিনপুর থানার নান্দিয়ারা গোরস্থানের পাশে একটি মাইক্রোবাস তার গতিরোধ করে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে জোর করে তাকে গাড়িতে তোলেন। পরে হাত-চোখ বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টা গাড়িতে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরায়। এসময় শরিফুলকে মারপিট করে অস্ত্রের মুখে একটি স্মার্টফোন ও আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। দুপুর ১টার দিকে চব্বিশমাইল আলাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গাড়ি থেকে তাকে ফেলে দিয়ে চলে যায়। গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার সময় শরিফুল ইসলাম পেছন দিকে লেখা গাড়ির নম্বরটি দেখে রাখেন।

এদিকে, মামলার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবি ও আমিনপুর থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে নামে। এতে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাসুদ আলম। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভোলার চরফ্যাশন, ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে তিনদিন ব্যাপক অভিযান চালিয়ে দুর্ধর্ষ ডাকাতচক্রের ছয়জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

এসময় গ্রেফতারদের কাছ থেকে ‘ডিবি ডিএমপি’ লেখা একটি জ্যাকেট, এক জোড়া হাতকড়া, ওয়াকিটকি, পুলিশের ব্যবহৃত একটি সিগন্যাল লাইট, মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারদের মধ্যে ১নং আসামি মাসুদ করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি, অস্ত্র ও মাদকসহ ১০টি মামলা রয়েছে। আসামি আরিফের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় আটটি মামলা, আরিফুলের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা ও চালক মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা ও বিভিন্ন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।

পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আকবর আলী মুন্সী বলেন, ডাকাত দল ডিবি পুলিশ সেজে পুলিশের মত সব উপকরণ ব্যবহার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে