প্রকাশিত : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:৪৪

মালিক খুঁজে না পাওয়ায় চোরাই গরু কনষ্টেবলের কাছে বিক্রি করলেন ধুনট থানার ওসি!

ধুনট বগুড়া প্রতিনিধি
মালিক খুঁজে না পাওয়ায় চোরাই গরু কনষ্টেবলের 
কাছে বিক্রি করলেন ধুনট থানার ওসি!

বগুড়ার ধুনট থানায় উদ্ধারকৃত চুরি হওয়া একটি গাভীন গরুর মালিক খুঁজে না পাওয়ায় ৫৬ হাজার টাকায় কনষ্টেবলের কাছে বিক্রি করেছেন ধুনট থানার নবাগত ওসি রবিউল ইসলাম। 

প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তরের জন্য গত এক বছর ধরে পুলিশ সদস্যরা গরুটি লালন-পালন করলেও ওসি রবিউল ইসলাম বুধবার গরুটি বিক্রি করে দিয়েছেন। এতে অন্য পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানাগেছে, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে এলাঙ্গী ইউনিয়ন থেকে চুরি হওয়া একটি গরু উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু গরুটির প্রকৃত কোন মালিক খুঁজে না পাওয়ায় এক বছর ধরে তাৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা ও কয়েক পুলিশ সদস্য গরুটি থানার ভিতরেই লালন-পালন করেন। 

এদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর ওসি কৃপা সিন্ধু বালা ধুনট থানা থেকে পাবনা জেলায় বদলী হন। অপরদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর নাটোরের একটি পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ধুনট থানায় যোগদান করেন ওসি রবিউল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা জানান, তাৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালার সময়ে এলাঙ্গী থেকে গরুটি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু প্রকৃত মালিক খুঁজে না পাওয়ায় গরুটি থানাতেই লালন পালন করা হচ্ছিল। কিন্তু নতুন ওসি এসেই গরুটি তার বডিগার্ড কনষ্টেবল মোফাজ্জল হোসেনের মাধ্যমে কনষ্টেবল সবুজের কাছে ৫৬ হাজার টাকায় গোপনে বিক্রি করে দেন। অথচ গরুটি যারা এক বছর ধরে লালন পালন করেছে তাদেরকে একটি টাকাও দেননি।

তবে এব্যাপারে নবাগত ওসি রবিউল ইসলামের বডিগার্ড কনষ্টেবল মোফাজ্জল হোসেন গরু বিক্রির ঘটনাটি অকপটে স্বীকার করে বলেন, গরুটি তার বন্ধু একই থানার কনষ্টেবল সবুজকে কিনে দিয়েছেন।

এব্যাপারে গরুর ক্রেতা কনষ্টেবল সবুজও গরু কেনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গরুটি গাভীন হওয়ায় ৫৬ হাজার টাকা দিয়ে অলিখিতভাবে ওসি রবিউল ইসলামের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন তিনি।

তবে এব্যাপারে তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, গরু বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে গরুটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরে দিতে থানাতেই লালন-পালন করা হয়েছে। পরবর্তীতে মালিক খুঁজে না পাওয়া গেলে আদালতের নিদের্শনার মাধ্যমে বিক্রি করতে হতো। কিন্তু হঠাৎ বদলী হওয়ায় অন্য পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব দিয়ে চলে এসেছি।

তবে গরু বিক্রির বিষয়টি জানতে ধুনট থানার নবাগত ওসি রবিউল ইসলামকে তার অফিস কক্ষে জিজ্ঞাসা করা হলে, প্রথমে তিনি বলেন, কার গরু? কে বিক্রি করেছে? বলে বিষয়টি অস্বীকার করেন। তখন সাংবাদিকরা তার বডিগার্ড ও গরুর ক্রেতা কনষ্টেবল সবুজের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি রেকর্ডের কথা বলতেই তিনি (ওসি) উত্তেজিত হয়ে পড়েন। 

এসময় সাংবাদিকদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজও করেন ওসি রবিউল ইসলাম। যা সাংবাদিকদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। এদিকে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করার প্রতিবাদে ক্ষুদ্ধ সাংবাদিক সমাজ। সাংবাদিকরা এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে