প্রকাশিত : ১০ নভেম্বর, ২০২২ ০১:৪০

আলাল মাল্টি ওয়েল মিলের ডিজিটাল মিটারে প্রতারণার ফাঁদ

খোয়া যাওয়া অর্থ ফেরতের দাবীতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ
আলাল মাল্টি ওয়েল মিলের ডিজিটাল মিটারে প্রতারণার ফাঁদ

পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া বাংলাবান্ধা বন্দর থেকে মালামাল লোড করে বগুড়ার শেরপুরে আলাল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান মাল্টি ওয়েল মিলস্ লিমিটেড ব্রীজ স্কেলে উঠলেই খোয়া যাচ্ছে কমপক্ষে ২’শ থেকে আড়াইশ কেজি পণ্য। চুক্তি মোতাবেক পণ্যের কমতির কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পন্যবহনকারী ট্রাক চালকেরা। ক্ষতিতে আলাল গ্রুপের ব্রীজ স্কেলের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে মর্মে একাধিক অভিযোগ করলেও কর্ণপাত নেই প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্তাদের। ফলে কমতি মালামালের হিসাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে এবং নিজে চুরি না করেও চোরের অপবাদ নিয়ে নানাভাবে হয়রানি হচ্ছে শ্রমিকরা। অনেক ট্রাক চালকদের নিজ বেতন থেকে ট্রাকের মালিককে ট্রাক ভাড়ার টাকা বুঝিয়ে দিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে বাড়ীতে। আলাল গ্রুপের ব্রীজ স্কেলের যান্ত্রিক ক্রটি কিনা, নাকি কারসাজি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন জনমনে! এ ঘটনার উন্মোচন হয় গত ৬ নভেম্বর, সেদিন একই মাল পাশ^বর্তী মেহেদি ট্রেডার্সে স্কেল করে বুঝতে পারেন এখানে কারসাজি রয়েছে। তাই ক্ষতিপূরণের অর্থ ফেরত দিয়ে যান্ত্রিক সমস্যা সমাধানের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেন ভূক্তভোগী অর্থ শতাধিক ট্রাক চালকরা। প্রতিবাদ কর্মসুচী হয় গত ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে রাজাপুরে আলাল গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আলাল মাল্টি ওয়েল মিলস্ লিমিটেড কোম্পানীর মূল ফটকের সামনে।

এসময় বগুড়ার জেলা বাস-মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষে সভাপতি মো. আরিফুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক মো. মতিউর রহমান মতি, কামাল হোসেন, কবির হোসেন, রাজু আহম্মেদ, মতিউর রহমান, বগুড়া জেলা ট্রাঙ্কলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি আবুল কালাম মুন্সি, জেলা ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, এছাড়াও আন্তজেলা ট্রাক শ্রমিক বান্দোবস্ত ইউনিয়ন এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দ জানান, দীর্ঘদিন যাবত শেরপুুরে আলাল গ্রুপ এর বিভিন্ন মিলে দেশী বিদেশী জাতের ভূট্টা, গম, সরিষা, রাইচ ব্যান্ড, খৈল আমদানী করার পর পরিবহনের সময় ট্রাক শ্রমিকদের চালানের সাথে ওজনে পার্থক্য সৃষ্টি করেন মিল কর্তৃপক্ষ। তারা মিলের ভেতরে ব্রীজ স্কেলে ওজনে ফাঁকি দিয়ে ট্রাক প্রতি ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা কম প্রদান করেন ট্রাক শ্রমিকদের। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করে কোন ফলাফল মিলেনি। এনিয়ে গত ৬ নভেন্বর থেকে শেরপুরের মির্জাপুর রাজাপুর মাল্টি ওয়েল মিলস লিমিটেড ফ্যাক্টরীতে মালামাল আনলোড করার সময় প্রায় ২৫টি ট্রাকের ওজনে ১৫০ থেকে ৩০০ কেজি মালামাল চুরির ঘটনা প্রকাশ পায়। মঙ্গলবার দুপুরে শত শত ট্রাক শ্রমিক সদস্য আর শ্রমিক নেতৃবৃন্দ  যোগ দেয় ওই চুরির ঘটনায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেন। 

এসময় আলাল গ্রুপের পক্ষে তার বড় ভাই আলহাজ্ব মো. দুলাল হোসেন জানান, আমার  ছোট ভাই বর্তমানে দেশের বাহিরে থাকায় আগামী দুই সপ্তাহ পর উল্লেখিত বিষয়ে সমাধান করা হবে। এসময় শ্রমিকদের দাবী অনুযায়ী আলালের সকল মিলে থাকা রাজাপুরে আসা প্রায় ২৫টি ট্রাকের প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন পণ্যের মূল্য চালানে লেখা অনুযায়ী মূল্য প্রদান করতে হবে।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে