প্রকাশিত : ১১ নভেম্বর, ২০২২ ২৩:৩৪

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা মাদকাসক্ত ও জুয়ারুদের দখলে প্রতিষ্ঠানের কক্ষ

ষ্টাফ রিপোর্টার
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা
মাদকাসক্ত ও জুয়ারুদের দখলে প্রতিষ্ঠানের কক্ষ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিমমিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় হয়রানির শিকার হচ্ছে অভিভাবকরা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠান প্রধানের উৎকোচ পক্র্রয়ে বিদ্যালয়ের কক্ষ ব্যবহার করছে মাদকাসক্ত বখাটে যুবক ও জুয়ারুরা। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা ভুক্তভোগীদের।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সরজমিনে জানা যায়, ছয়ঘরিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় দীর্ঘ দিন থেকে অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। গত সপ্তাহে নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষে প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সহযোগিতায় নির্বাচনি তফশিল ঘোষণা করে। এ উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে তফশিল প্রকাশের পাশাপাশি এলাকায় মাইকে তা প্রচার করে। ঘোষিত তফশিলে মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ তারিখ ১০ নভেম্বর এবং ভোট গ্রহণ ২৬ নভেম্বর।
মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষদিন দুপুরে সরেজমিনে এ প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হলে- মাঠে স্থানীয় অভিভাবকদের জটলা দেখা যায়। তাদের সাথে কথা বললে জানান, বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন। আমরা সকাল ১০টা থেকে প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে চেষ্টা করি। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় দুপুর গড়িয়ে বিকাল। এখনও দেখা নেই তার। মোবাইল ফোনে অনেকেই প্রধানশিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি একটু বাহিরে আছি। আপনারা অপেক্ষা করেন। আমি আসছি। 
প্রধানশিক্ষকের অপেক্ষায় ধৈর্য্যহারা একজন কথা বলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে। মোবাইল ফোনে তিনি জানান, নির্বাচন স্থগিত করা হলো। আগামী এক বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার এমন বক্তব্য ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।
এ সময় উপস্থিত অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্যে অভিযোগ করেন- প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যোগসাজসী ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অসৎ উদ্দেশ্যে লিপ্ত। তারা শেষ দিনে ঘোষিত তফশিল স্থগিত করে আমাদের ক্ষতি ও হয়রানি করেছে। তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় এ দুর্ভোগের আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের আহ্বান তাদের।
বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে মোবাইলে আমাদের কথা হয়  প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেনের সাথে। তিনি জানান, মাধ্যমিক স্যার বলেছেন সময় কম থাকায় নির্বাচন স্থগিত করা হলো। আগামীতে কমিটি গঠন করার আগে সবাইকে জানানো হবে। নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার পর স্বেচ্ছাচারিতায় স্থগিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আপনাদের সাথে গোবিন্দগঞ্জে পরে দেখা করে সব জানাব। 
নির্বাচনি তফশিল স্থগিত বিষয়ে মোবাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম পারভেজ জানান, প্রধানশিক্ষক দেরি করে ফেলায়; এত অল্প সময়ের মধ্যে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সহ পুরো পক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। আবারও অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে বিদ্যালয়টি পরিচালিত হবে। তিনি আরও জানান, গোপনে কমিটি করার অবকাশ নেই।
অপরদিকে বিদ্যালয়টির একটি কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্নতা সহ জুয়া খেলার সরঞ্জাম। এ প্রসঙ্গে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, এলাকার মাদকাসক্ত বখাটে যুবক ও জুয়ারুদের দখলে প্রতিষ্ঠানটি। সন্ধ্যার পরেই এখানে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে মেতে ওঠে তারা। বিষয়টি প্রধানশিক্ষকের জানা থাকলেও অদৃশ্য কারণে তিনি না জানার ভ্যান করেন। বিদ্যালয়কেন্দ্রিক রাতের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ চান স্থানীয়রা।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে