প্রকাশিত : ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ২২:৩১

কাউনিয়ায় অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলি

কর্তৃপক্ষের নিরব ভুমিকায়
কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
কাউনিয়ায় অনলাইনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলি

ঘুষ নামক ভুত ছারাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর অনলাইনে শিক্ষক বদলির কার্যক্রম চালু করছে। কিন্তু কাউনিয়ায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনলাইনে বদলি নিয়ে শুরুতেই মানুষের মনে নেতিবাচক ধারনা জন্ম নিয়েছে। 
রংপুরের কাউনিয়ায় অনলাইনে আবেদনের মাধ্যেমে বদলি শুরুর প্রথমেই চরঢুসমরা সরকারী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষা অফিস কোনকিছু তোয়াক্কা না করেই বদলি হওয়ায় অনলাইনে বদলি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে গত ২৯/০৯/২২ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও কার্যকরী কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে মানুষের মনে ঘুষ নামক ভুতের প্রভাবে বদলি হয়েছে বলে ধারনা করছে। জানাগেছে কাউনিয়ার বালাপাড়া ইউনিয়নের চরঢুসমারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪জন শিক্ষক কর্মরত আছেন। এর মধ্যে থেকে সর্বকনিষ্ঠ সহকারী শিক্ষক খুশি রানী মিথ্যা তথ্য দিয়ে অনলাইনে আবেদন করে তার বদলী নিশ্চিত করেন। গত ২নভেম্বর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল হামিদ স্বাক্ষরিত পত্রে খুশি রানী কে গনাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ প্রদান করা হয়। এই বদলি নিয়ে জনমনে প্রশ্ন যে বিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষক কর্মরত সেখান থেকে কোন ভাবেই বদলি হওয়ার কথা নয়, তারপরও সবচেয়ে কনিষ্ঠ শিক্ষক কিভাবে বদলি হলো, নিশ্চয় মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে একাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছারা খুশি রানি তার আবেদনে তার বাড়ি নদীতে ভেঙ্গে গেছে এবং বাড়ি থেকে বিদ্যালয় ৩৫কিঃমিঃ দেখিয়েছেন কিন্তু বাস্তবে তার বাড়ি নদী ভাঙ্গে নাই এবং তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয় মাত্র ৪ কিঃমিঃ। নীতিমালা অনুযায়ী বাড়ি নদীতে ভাংলে এসিল্যান্ড কর্তৃক প্রত্যায়ন পত্র লাগে সেটিও নেই। বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী প্রত্যায়ন দিয়েছেন খুশি রানীর বাবা ও স্বামীর বাড়ি নদীতে ভাঙ্গে নাই অক্ষত রয়েছে। প্রকাশ থাকে যে অনলাইনে শিক্ষক বদলি নিতি মালায় কমপক্ষে ৫ বা ততধিক শিক্ষক থাকা বাদ্ধতা মুলক, সেখানে ৪ জন শিক্ষকের কর্মরত বিদ্যালয়ে কিভাবে বললির আবেদন গ্রহন এবং উপজেলা শিক্ষ অফিসার কোন অদৃশ্য শক্তির বলে উহা বদলির জন্য অগ্রয়ন করেন ? যাহা জনমনে বোধগম্য নয়। তাহলে কি সরকারের এই মহতি প্রচেষ্টা কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার কারনে ভেস্তে যেতে বসেছে। এছারাও কাউনিয়ায় অনান্য বিদ্যালয় গুলোতে যে বদলি হয়েছে সেখানেও জেষ্ঠ্য শিক্ষকের কোন গুরুত্ব না দিয়ে কনিষ্ঠ শিক্ষদের বদলি করা হয়েছে, ফলে অনলাইনে বদলি, নাকি অর্থের বিনিময় বদলি সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে ১জন শিক্ষক বদলি হওয়ায় শিক্ষার পরিবেশ মারাত্বক ভাবে বিঘ্ন হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক অফিসের কাজে উপজেলায় গেলে ২জন শিক্ষক দিয়ে চালাতে হয় বিদ্যালয়। ২জন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয় কিভাবে চালান সম্ভব তা কারও বোধগম্য নয়। এভাবেই চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। খুশি রানী জানান, আমি আবেদন করেছি, কর্তৃপক্ষ আমাকে বদলির আদেশ দিয়েছে তাই আমি গনাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেছি। চরাঞ্চলের এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও শিক্ষার সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং সরকারের মহতি উদ্যোগ বাস্তবায়নে উক্ত শিক্ষকের বদলি বাতিলের দাবী চারাঞ্চলের অভিভাবকদের। এছারাও কাউনিয়ায় অন্য যেসব বদলি হয়েছে তারও সুষ্ঠু তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন অনেকেই।এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ জানান, এই আবেদনটি কিভাবে পার হলো তা তিনি জানেন না, তবে যেহেতু উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বদলির আদেশ দিয়েছেন সেহেতু আমি তাকে বদলির চিঠি দিয়েছি। আমি বিষয়টি তদন্ত করেছি সে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে তা স্পষ্ট হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা অফিসার বারাবরে প্রেরন করেছি। সেখান থেকেই পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন করবে। রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শাহজাহান সিদ্দিক জানান, একটি অভিযোগ পেয়েছি, অভিযোগের সত্যতা আছে, আমি মৌখিক ভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে বদলির আদেশ দিতে নিশেধ করেছি। এরপরও উনি নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে। আমি বিষয়টির প্রতিকার ও ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকায় পাঠাবো। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। 

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে