প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ২১:১৪

দুর্নীতির দায়ে বগুড়ার শেরপুরের কলেজ সভাপতির পদ হারালেন মজিবর রহমান মজনু

ধুনট বগুড়া প্রতিনিধি
দুর্নীতির দায়ে বগুড়ার শেরপুরের কলেজ
সভাপতির পদ হারালেন মজিবর রহমান মজনু

দুর্নীতির দায়ে বগুড়ার শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা কলেজের সভাপতির পদ হারিয়েছেন বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু। গত ১৪ নভেম্বর জাতীয় বিশ^ বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানার স্বাক্ষরিত এক স্মারকপত্রে মজিবর রহমান মজনুর স্থলে সভাপতি পদে শেরপুর ইউএনও’কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

জানাগেছে, ২০১০ সালে বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মজনু শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা কলেজের সভাপতি পদে মনোনীত হন। 

এরপর ২০১০ সালের ২৭ জুলাই থেকে ২০১৭ সালের ২০ আগষ্ট পর্যন্ত মজিবর রহমান মজনু প্রতিষ্ঠানের আইসিটি প্রদর্শক আব্দুল ওহাবের মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা উন্নয়নের নামে ব্যয় করেন। যার কিছু ভাউচার সেখানে জমা দেয়া হলেও অনেক বিষয়ে অসংগতি রয়েছে।

এছাড়া ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষাবোর্ড ৪ লাখ ৭ হাজার ৫৫০ টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেয়। কিন্তু কলেজ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ওই টাকা কিছুটা ফেরত দিয়ে অধিকাংশ টাকাই আইসিটি প্রদর্শক আব্দুল ওহাবের মাধ্যমে আত্মসাত করেছেন।

এসব বিষয়ে শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ একেএম নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগপত্রে অধ্যক্ষ একেএম নূরুল ইসলাম আরো জানান, কলেজ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু শিক্ষক নিয়োগের জন্য নূন্যতম ১০ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন। যা কলেজ ফান্ডে জমা না করেই তিনি আত্মসাত করেন।

তাছাড়া কলেজটি সরকারি করণের নামে মজিবর রহমান মজনু সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে মোট ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি কলেজ প্রাঙ্গনে মাটি কাটা, ক্লাস রুমের বেঞ্চ তৈরীর নামেও ভুয়া ভাউচার তৈরী করে কলেজ ফান্ডের কয়েক লক্ষাধিক টাকা আত্মসাত করেছে।

এদিকে কলেজ সভাপতির বিরুদ্ধে এসব দূর্ণীতির অভিযোগ জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দায়ের পর তদন্ত শেষে মজিবর রহমান মজনু ওই কলেজের সভাপতির পদ হারান।

তবে দুর্নীতির দায়ে মজিবর রহমান মজনু শুধু কলেজ সভাপতির পদই হারাননি, বীর মুক্তিযোদ্ধার পদবিটাও হারিয়েছেন। অন্যজনের লাল মুক্তিবার্তা নাম্বার জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধা সেজে ছিলেন তিনি। কিন্তু ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৪ জুন তার মুক্তিযোদ্ধার সনদটিও বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করে মন্ত্রনালয়।   

তবে এবিষয়ে বক্তব্য নিতে কলেজ সভাপতি ও বগুড়া আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, আমি শুধু জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে আমাকে সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে আমি নতুন যোগদান করায় এসব বিষয়ে কিছু জানা নাই। 

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে