প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩ ২২:৫১

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও অধিবাসীদের বিরোধ নিরসনে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি-
শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও অধিবাসীদের বিরোধ নিরসনে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত

বগুড়ার শেরপুরে ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল-গোরতা গ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠিদের সাথে স্থানীয় অধিবাসীদের চলমান বিরোধ নিরসনে সম্প্রীতির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শেরপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরের উলিপুরস্থ জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বগুড়া জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ডিডিএলজি) মাসুম আলী বেগ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মজিবর রহমান মজনু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ আব্দুর রশিদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা, আদিবাসী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেবেকা সরেন, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, আদিবাসী জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ কুমার পাল, বগুড়ার জেলা হিন্দু -বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ডা. এনসি বাড়ই, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, এ্যাড. সাইফুল ইসলাম শান্ত, বগুড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন মিন্টু, হিন্দু -বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের শেরপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পরিমল দত্ত, এনএসআই এর  পরিচালক মাজহারুল মান্নান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের পক্ষে আদিবাসী পরিষদ বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ সিং ও স্থানীয় অধিবাসীদের পক্ষে ওবায়দুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, উপজেলা শিক্ষা পরিদর্শক ছায়েদুর রহমান।

এসময় শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরিন, শেরপুর থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ জামাল সিরাজী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. গোলাম ফারুক, উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি সাইফুল বারী ডাবলু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন উত্তরবঙ্গ প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান বিলু, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ খান, হরিশংকর সাহা, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, পিয়ার হোসেন পিয়ার, শাহ আলম পান্না, জাকির হোসেন, জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ সহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, গনমাধ্যমকর্মী, আইনজীবি ও সুধীবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

আদিবাসী ইউনিয়নের সভাপতি রেবেকা সরেন বলেন, ‘আদিবাসীরা শান্তি প্রিয় মানুষ। তারা কখনোই ঝগড়া বিবাদ চায়না। জমি নিয়ে বিরোধ থাকলে আদালতে নিস্পত্তি হবে। কিন্তু তাদের উপর নির্মমভাবে হামলা করা হয়েছে। এই ঘটনায় মসজিদের মাইকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়িয়ে আদিবাসীদের নির্মূলের চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রশাসনকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(ডিডিএলজি) মাসুম আলী বেগ বলেন, ‘আমরা এখানে  জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা রাখি না। এটা আদালতের দায়িত্ব। কিন্তু এটা নিয়ে কোন সংঘাত সৃষ্টি করে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো যাবে না।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শেরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবর রহমান মজনু বলেন, “এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। এটা নিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার সুযোগ নেই। আমরা সবার সাথে আলোচনা করে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান করতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।

সমাবেশে বক্তারা গত ৮ ও ১১ জানুয়ারি  উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি নেতা সন্তোষ সিংয়ের এর পৈত্রিক জমি সহ আম্বইল, গোড়তা মৌজার আদিবাসীদের ভোগ দখলে থাকা জমি স্থানীয় ভূমিদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার ও আদিবাসী পল্লীতে নারী-শিশু-বৃদ্ধদের হামলা চালানোর ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। তবে দেশের সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বসবাস শান্তিপূর্ণ ও সহিংসতামুক্ত করতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বন্ধন সুদৃঢ় করার জন্য অগ্রনী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা।
সমাবেশে উভয় পক্ষের আইনজীবিসহ ৫জন করে সদস্য নিয়ে পরবর্তীতে সম্মিলিত বৈঠক হবে। জেলা প্রশাসনের একটি দল কাগজপত্র দেখে ও আলোচনা করে বিরোধ নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবেন সৃষ্ট সমস্যা সমাধান করার প্রক্রিয়া হবে বলে জানান আয়োজক কমিটি।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন                 

উপরে