দরপত্র ছাড়াই পৌরসভার দোকান ঘর নির্মাণ!

বগুড়ার শেরপুর পৌরসভায় দরপত্র ছাড়াই নিয়মবহির্ভূত ভাবে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ধুনটমোড় কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে এই নির্মাণকাজ চলছে। সেখানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চলমান শৌাচাগার নির্মাণ কাজের পাশাপাশি শৌচাগার ঘেঁষে ৪টি দোকান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ উঠেছে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রচারণা ছাড়াই দোকানঘরের জায়গা বরাদ্দ দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ঘর নির্মাণের কাজে কোনো দরপত্র আহ্বান এবং ঘর বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে কতিপয় ব্যক্তিদের নামে নতুন করে এই ৪টি দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গেলে, দোকান ঘর নির্মাণ শ্রমিক মো: মনজুরুল ইসলাম বলেন, হেড মিস্ত্রি’র কথায় এখানে কাজ করতে এসেছি। এখানে আসার পর স্থানীয় ট্রাক মালিক সমিতির নেতা রফিকুল ইসলাম আমাদেরকে কাজ বুঝিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাক মালিক সমিতির রফিকুল বলেন, আমি এখানে দেখভালের দায়িত্বে আছি পাশাপাশি এই কাজে বালু সরবরাহ করছি। কাজ মেয়র করাচ্ছেন। আমি প্রতিবেশী তাই সহযোগিতা করছি।
৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফিরোজ আহম্মেদ জুয়েল জানান, পৌর পরিষদের রেজুলেশন মোতাবেক মেয়রের নির্দেশে ৪টি দোকানঘর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। কাজটি ইমারজেন্সি ওয়ার্ক হিসেবে কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন। তবে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার বিষয়টি অবগত নন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কোনো রেজুলেশন হয়নি বা অবগত নন বলে জানিয়েছেন, প্যানেল মেয়র সহ ১ থেকে ৭নং ওয়ার্ডের সকল কাউন্সিলররা। তারা বলছেন, দরপত্র ছাড়া কোনো প্রকার রেজুলেশন না করে মাসিক মিটিং না করে কাউকে না জানিয়ে অবৈধভাবে এই কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পৌর মেয়র। তারা বলছেন, গোপনে পৌরসভার বিভিন্ন জায়গা অবৈধভাবে বিক্রি করছে পৌর পরিষদের একটি অংশ, এমনকি এই চারটি ঘরও ৪০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি জানান, এর আগে ওই টার্মিনালে সাবেক পৌরপরিষদ ১০টি দোকান ঘর নির্মান করে ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করলেও সেখানে ১টি দোতলা পুরাতন ভবনের ৩টি দোকানঘর ও রাস্তার পশ্চিমের দোকানঘর গুলো কতিপয় ব্যক্তি ভোগদখল করে আসছে। এ বিষয়ে একটি শক্ত তদন্তের দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
এ বিষয়ে শেরপুর পৌরসভার মেয়র জানে আলম খোকা বলেন, নতুন দোকানঘর গুলোর নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আলোচনা করে পরবর্তীতে কাজ শুরু করা হবে। তবে পুরাতন দোতলা ভবন ও রাস্তার পশ্চিমের দোকান ঘর তার আমলে হস্তান্তর হয়নি, এ সংক্রান্ত কাগজপত্র পৌরসভার ডকেটে আছে কিনা তা দেখতে হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন