প্রকাশিত : ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১০:৪৬

বগুড়ায় বাড়ছে ছুরিকাঘাতের ঘটনাঃ চাকু বিক্রি বন্ধে পুলিশের অভিযান

সঞ্জু রায়ঃ
বগুড়ায় বাড়ছে ছুরিকাঘাতের 
ঘটনাঃ চাকু বিক্রি বন্ধে পুলিশের অভিযান

প্রতিদিন সকালে খবরের কাগজ কিংবা অনলাইনে চোখে পড়বে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বগুড়াতে তুচ্ছ ঘটনায় ছুরিকাঘাতের ঘটনা লেগেই আছে। যারা এই ছুরিকাঘাতের সাথে জড়িত দেখা যায় তাদের অধিকাংশই কিশোর কেউ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী না। বগুড়ায় মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে তুচ্ছ ঘটনায় ছুরিকাঘাতের শিকার হয় ৯ জন যা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে শহরবাসীর। বগুড়া শহরের বিভিন্ন দোকানে চাকু প্রাপ্তির সহজলোভ্যতাকেই অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছে বগুড়া জেলা পুলিশ। যদিও দোকানদাররা বলছে তাদের দোকানে থাকা চাকু দিয়ে গৃহস্থালির কাজ হয় কিন্তু এই সুযোগ যে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা নিয়ে অপরাধমূলক কার্যক্রম করছে তা তাদের জানা ছিলো না।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের কাঁঠালতলা ও চুড়িপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র (চাকু) বিক্রি বন্ধ ও উদ্ধারে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছে বগুড়া সদর থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখা। 
অভিযানে ইদ্রিস মার্কেটের নুরুল স্টোর থেকে ১২০ টি ও চুরিপট্টি মার্কেটের দাদা ভাই স্টোর থেকে ৯০টিসহ মোট ২১০ টি চাকু উদ্ধার করা হয়। এসময় এই দুই দোকানের মালিকদের এ ধরণের চাকু বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়ে সতর্ক করে পুলিশ। 
নুরুল স্টোরের মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, 'এই চাকু দিয়ে অপরাধ সংগঠিত হয়  তা তাদের জানা ছিলোনা। প্রশাসন থেকে যেহেতু নিষেধ করেছে তাই এরপর থেকে আর তারা বিক্রি করবে না’।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম জানান, উদ্ধার হওয়া চাকু দিয়ে বর্তমান সময়ে শহরের নানা রকম অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। এইসব চাকুর দাম সহজলভ্য হওয়ায় কিশোরাও এগুলো দিয়ে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি বগুড়াতে যে ছুরিকাঘাতের ঘটনাগুলো ঘটেছে তার অধিকাংশই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবং বেশিরভাগ বন্ধুদের তর্কাতর্কির জেরে। যদিও এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিলো তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে চাকু উদ্ধারের এই অভিযান চলমান থাকবে।
বৃহস্পতিবার চাকু উদ্ধার ও বিক্রি বন্ধে সতর্ককরণ অভিযানে অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন সদর ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বাবু কুমার সাহা, সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: শাহীনুজ্জামান, সদর থানার সেকেন্ড অফিসার মঞ্জুরুল হক ভূঁইয়া, এসআই খোরশেদ আলমসহ জেলা গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা।
এদিকে বগুড়া সদর থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, আগামী ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে গত বুধবার থেকে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্ত্তীর নির্দেশনায় বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে যা চলমান থাকবে। বিশেষ চেকপোস্টের মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অভিযান চালানো হচ্ছে এবং চাকু ও মাদক উদ্ধারের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে অভিযানে।

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে