প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ০০:১১

শখের বসে পাখি পালন শুরু করে এখন লাখ টাকা আয় ধুনটের খামারীদের

ইমরান হোসেন ইমন, ধুনট (বগুড়া) থেকে:
শখের বসে পাখি পালন শুরু করে এখন লাখ
টাকা আয় ধুনটের খামারীদের

শখের বসে পাখি পালন শুরু করেছিলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের আবু তাহের বাবু। বাড়িতে বসেই পাখি পালন করে এখন তিনি লাখ টাকা আয় করছেন। প্রায় ১০ বছর আগে পাখির খামার গড়ে তোলা এই উদ্যোক্তার অনুপ্রেরনায় ধুনট উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৫০টিরও বেশি পাখির খামার গড়ে উঠেছে। 

ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের পাখি খামারী আবু তাহের বাবু জানান, প্রথমে শখের বসে পাখি পালন শুরু করলেও এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে পাখি পালন শুরু করেছেন। তার খামারে প্রায় ৫ লাখার টাকার মতো পাখি রয়েছে। প্রতিমাসে তিনি প্রায় লাখ টাকার মতো পাখি বিক্রি করে থাকেন।

পাখি খামারী বাবু জানান, তার খামার দেখে অনুপ্রানিত হয়ে প্রতিবেশি রিপন ঘোষ নামে আরেক ব্যক্তি পাখি পালন শুরু করেন। প্রথমে তার পাখি পালনের ঘর না থাকলেও কোন মতে পাখি পালন শুরু করে এখন তিনি লাখ টাকা আয় করেছেন। তার খামারের আয় দিয়ে পাকা বাড়িও নির্মান করছেন।

খামারী আবু তাহের বাবু আরো জানান, তার খামারে গোল্ডেন বার্ড, লংটেল, আউল, চেরি, প্যারট, জাভা, ফায়ারটেল, সান কনুর, টিয়া, লরি, রোজেলা, লাভ বার্ড, কাকাটেল, ঘুঘু ও বাজারিকা প্রজাতির পাখি রয়েছে। এসব পাখি বিভিন্ন প্রজাতি ও বয়স অনুযায়ি ৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত জোড়া বিক্রি হয়ে থাকে।        

রাঙ্গামাটি গ্রামের পাখি খামারী আব্দুল মান্নান জানান, তার খামারে বাজারিকা, লাভ বার্ড, কোকাটিলসহ বিভিন্ন বিদেশী প্রজাতির পাখি রয়েছে। এইসব পাখি পালন করে বাড়ি বসেই প্রতি মাসে তার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা উপার্জন হচ্ছে। বিভিন্ন রং-বেরঙয়ের সৌখিন এসব পাখির বাজারে চাহিদা থাকায় দূর দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে পাখি কিনে নিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হয় না। তিনি বলেন, অল্প পুঁজি ও কিছু সময় শ্রম দিলেই পাখি পালন করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। তবে করোনার সময় চাহিদা কম থাকায় কিছুটা লোকশান হলেও এখন লাভের মুখ দেখতে চান এসব পাখি খামারীরা।

ধুনট সদরের পাখি খামারী তাপসী রানী বলেন, বিদেশী জাতের পাখি খামারে কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও অনেকেই লাভবান হয়েছেন, আবার অনেকেই ক্ষতির সম্মূক্ষিনও হচ্ছেন। তবে সরকারিভাবে যদি পাখি পালনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়, তাহলে বেকার যুবকেরা বাড়িতে বসেই বাড়তি আয় করতে পারবেন।

ধুনট উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: নাবিল ফারাবি জানান, বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বিভিন্ন রোগ হয়ে থাকে। বিশেষ করে শীতেকালে একটু রোগবালাই বেশি হয়। পাখি খামারীরা রোগবালাই বিষয়ে মাঝেমধ্যেই পরামর্শ নিতে আসেন। 

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্র্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, পাখি নিধন নয়, বরং লালন-পালনেই আনন্দ রয়েছে। তাই সৌখিনতা বা শখের বসে অনেকেই বাড়িতে পাখি পালন করে থাকেন। পাখি পালন করে অনেকেই এখন স্বাবলম্বিও হচ্ছেন। 

 দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে