প্রকাশিত : ১৩ মে, ২০২৩ ০২:২২

রাণীনগরে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার অভিযোগ শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা

ষ্টাফ রিপোর্টার
রাণীনগরে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার অভিযোগ
শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারি নির্দিষ্ট সময়ের দুই ঘটা আগে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে প্রতিদিন বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রীদের ২ থেকে ৩ সাবজেক্ট পড়ানো হচ্ছে না। ফলে বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে প্রায় প্রতিদিনই দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে বিদ্যালয়টি ছুটি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের আকনা বাজারের পাশে অবস্থিত আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়া করে আসছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৩০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। সরকারি নিময় অনুযায়ী শুক্রবার-শনিবার বাদে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর কথা। কিন্তু উল্টো চিত্র আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে দুপুর দুইটার মধ্যে। ফলে দুপুরের পরের ক্লাসগুলো করানো হচ্ছে না। এতে করে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা ফারুক হোসেন, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের বাবা তুহিন ও দশম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা মিরাজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক বলেন, প্রায় এক বছর ধরে বিদ্যালয়টি দুপুর দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে ছুটি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির লোকজনকে বলেও কোন সুরহা হয়নি। এতে করে আমাদের স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছেন। তারা আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে অবহেলায় প্রধান শিক্ষক তার খেয়াল-খুশি মত বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। এতে সুনামধন্য প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন তার সুনাম হারাতে বসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, রুটিন অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমাদের ৭টি বিষয়ে ক্লাশ হওয়ার কথা। কিন্ত বিদ্যালয়ে সকাল থেকে দুপুরে টিফিনের আগ পর্যন্ত ৪টা বিষয়ে ক্লাশ হয়। এরপর কোনদিন টিফিনের সময়, আবার কোনদিন দুপুর দুইটার পর বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়। ফলে টিফিনের পরের বাকি তিনটা ক্লাশ হচ্ছে না। এতে করে আমিসহ আমার সহপাঠিরা দিন দিন লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন বলেন, বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষা চলছে। আমার বিদ্যালয় থেকে ৫-৬ জন শিক্ষক পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন। সে কারণে বিদ্যালয় দুপুরের দিকে ছুটি দেওয়া হচ্ছে। এক বছর ধরে প্রতিদিন দুপুর দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নে তিনি অস্বীকার করে বলেন, অভিভাবকরা মনগড়া কথা বলেছে। আমার বিদ্যালয় সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

এদিকে আকনা-বাঁশবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বুলু প্রামানিকের বক্তব্যের জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে