প্রকাশিত : ১৩ মে, ২০২৩ ২২:০৯

শাজাহানপুরে পৌরকাউন্সিলরের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল: প্রতিবাদে ঝাঁড়ু মিছিল

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
শাজাহানপুরে  পৌরকাউন্সিলরের নেতৃত্বে 
 বিক্ষোভ মিছিল: প্রতিবাদে ঝাঁড়ু মিছিল

বগুড়ার শাজাহানপুরে  পৌরসভার কাউন্সিলর আল মামুনের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ওই কর্মসূচি শেষরহতে না হতেই পৌরকাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পাল্টা ঝাঁড়ু মিছিল করেছে গন্ডগ্রাম মিঞাপাড়ার বাসিন্দারা। এসময় দু'পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থকায় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বগুড়া পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের (লতিফপুর) সামনে থেকে প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এলাকাবাসীর ব্যানারে কমিশনারের পক্ষে এই মিছিল ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের বেতগাড়ি এলাকা প্রদক্ষিণ করে গণ্ডগ্রাম পূর্বপাড়া এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে স্থানীয় সড়কে মানববন্ধন করা হয়। এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়া পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষের সঙ্গে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আল মামুনও উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে অভিযোগ তোলা হয়, বগুড়া গণ্ডগ্রাম মিঞাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর সিদ্দিক রিপন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা রয়েছে। তার সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি রিপনের সন্ত্রাসী বাহিনী কমিশনার আল মামুনের ওপর হামলা চালায়। রিপনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ায় হামলার শিকার হন কমিশনার।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি রিপনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয় এই মানববন্ধনে। একই সঙ্গে কমিশনারের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় নেওয়ারও দাবি করা হয়।

বিক্ষেভ মিছিল ও মানববন্ধন শেষ করে বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে ওয়ার্ড কার্যালয়ে যান কমিশনার মামুন। সেখানে তার সঙ্গে শতাধিক নারী-পুরুষও ছিলেন। ওই সময় রিপনের পক্ষের লোকজন ঝাঁড়ু মিছিল নিয়ে কমিশনার কার্যালয় প্রদক্ষিণ করে গণ্ডগ্রাম মিয়াপাড়ার দিকে চলে যায়। এই মিছিলে দুই শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

তারা অভিযোগ করেন, কমিশনার আল মামুন স্থানীয়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এছাড়াও কোনো নির্মাণ কাজ হলেই কমিশনার নিজেই চাঁদাবাজি করেন। আর বিভিন্ন সালিসে টাকার বিনিময়ে যেকোনো পক্ষে কাজ করেন তিনি। ন্যায়-অন্যায় দেখেন না কমিশনার। 

জানা গেছে, গণ্ডগ্রাম মিঞাপাড়া এলাকায় একটি রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে  কাউন্সিলর আল মামুনের উপর হামলার উদ্দেশ্যে একদল যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেন। তারা আবু জাফর সিদ্দিক রিপনের লোকজন বলে দাবি করেন কমিশনার। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে।

গণ্ডগ্রাম মিঞাপাড়ায় প্রায় ৩৬ বছর আগে ১১ শতক জমি কেনেন বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বাসিন্দা কানাডা প্রবাসী আব্দুর রশিদ। ওই জমিতে যাতায়াতের জন্য ৬ ফুট চওড়া রাস্তা নিতে পাশের জমির মালিকদের সাথে ২ শতক জমির বিনিময়ে সমঝোতা করেন আব্দুর রশিদ। ওই সমঝোতায় নেতৃত্ব দেন  আবু জাফর সিদ্দিক রিপন। 

গত বৃহস্পতিবার রাস্তা তৈরির কাজ চলাকালে পাশের জমির মালিকদের মধ্যে বুলবুল নামের একজন রাস্তা দিতে অস্বীকার করেন। বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলর মামুনের সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় রিপন ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও রাস্তা সংক্রান্ত বিরোধে তাকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেন মামুন। পরে ঘটনাস্থল থেকে নিজবাড়ি গণ্ডগ্রাম পূর্বপাড়ায় চলে যান তিনি। ওই দিনই বিকেলে আসরের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যাচ্ছিলেন কমিশনার। এ সময় তার উপর হামলার উদ্দেশ্যে ১০-১২ টি মোটরসাইকেলযোগে একদল যুবক মহড়া দেয়। একই সঙ্গে মামুনকে  উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করেন তারা।  

কমিশনারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কানাডা প্রবাসী আব্দুর রশিদের জমিতে যাতায়াতের রাস্তা তৈরির জন্য স্থানীয়দের সাথে নিয়ে তা সমঝোতা করেন রিপন। কিন্ত সমঝোতা মোতাবেক যখন রাস্তা তৈরির কাজ হচ্ছিল তখন কাউন্সিলর মামুন ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় যুুবকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।  এতে যুবকরা ক্ষুব্ধ হয়। 

জানতে চাইলে বগুড়া কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কমিশনারের ওপর হামলার অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে