প্রকাশিত : ২৯ মে, ২০২৩ ০১:০৭

ব্যানারে সাপ্লিমেন্ট, প্রেসক্রিপশন করছে ঔষধও

শুভ কুন্ডু, শেরপুর-বগুড়া,
ব্যানারে সাপ্লিমেন্ট, প্রেসক্রিপশন করছে ঔষধও

সাপ্লিমেন্ট কোম্পানির সাইনবোর্ড লাগিয়ে চড়া দামে নিম্নমানের ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রির অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি চেম্বার খুলে রোগীদের ব্যবস্থাপত্রও দেওয়া হচ্ছে এখান থেকে। ৪ বছরের শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সী নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেই ব্যবস্থাপত্র ও সাপ্লিমেন্ট প্রয়োগ করছেন তারা। এমন অভিযোগ বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উলিপুর পাড়ায় একটি সাপ্লিমেন্ট বিক্রয় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।

সরজমিনে দেখা যায়, একটি ফুড সাপ্লিমেন্ট কোম্পানির সাইনবোর্ড লাগিয়ে জনৈক মো: সুমন প্রায় সাত বছর যাবৎ এখানে ব্যবসা করে আসছেন। সেখানেই চেম্বার খুলে স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ পরিচয়ে জনৈক এইচ.এম. বেল্লালুর রহমান নানাবিধ রোগের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। নির্দিষ্ট কোম্পানির বাহিরেও এখান থেকে বিভিন্ন নিম্নমানের সাপ্লিমেন্ট বিক্রির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। নিম্নমানের এসব সাপ্লিমেন্টে কোনো সুফল পাননি তারা।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী চাঁদনী বাজারকে জানান, “এক প্রতিবেশীর মধ্যমে উলিপুর পাড়া থেকে প্রায় সারে পাঁচ হাজার টাকার বিদেশী ঔষধ কিনি। সেখান থেকে আলাদা দুইটি প্রেসক্রিপশন দিয়েছে। কিন্তু ঔষধে কোনো কাজ না হওয়ায় পরবর্তীতে আর যাইনি।” তাকে লোকাল প্রডাক্ট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

তিনি আরো জানান, “ওখানে প্রচুর রোগীরা চিকিৎসা নেয় এবং টাকা নিয়ে সেখানে মহিলাদের ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে রোগী দিতে পারলেই পাওয়া যায় কমিশন। সেখানে বেশ কিছু মহিলা এগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য নিয়োজিত আছেন।”

ঘটনাস্থলে সাপ্লিমেন্ট কোম্পানির পরিবেশক মো: সুমনের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি জানান, বেশিরভাগই নির্দিষ্ট কোম্পানির প্রডাক্ট বিক্রি করি। এর বাহিরে যা দুই-একটা বিক্রি করতাম পরবর্তীতে করব না। ঔষধের প্রেসক্রিপশনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার এখানে একজন কনসালটেন্ট বসেন। এখান থেকে থ্রিডি ডিজিটাল স্ক্যানার মেশিনের মাধ্যমে রোগীদের প্রাথমিক সমস্যা চিহ্নিত করে সাপ্লিমেন্ট প্রয়োগের পাশাপাশি জরুরী প্রয়োজনে মেডিসিন দেওয়া হয়। এর জন্য রোগী প্রতি ১৫০০ টাকা সার্ভিস চার্জ নিয়ে ৩ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত সেবা দেন তারা।

এইচ এম বেল্লালুর রহমানের ভাষ্যমতে, ৬৭ টি ওটিসি (ওভার দ্যা কাউন্টার) ড্রাগ লেখার অনুমতি আছে তার। কিন্তু তার দেওয়া মনস্তাত্ত্বিক রোগের ঔষধ (এন্টিডিপ্রেসেন ড্রাগ) উল্লেখিত ওটিসি ড্রাগের মধ্যে পরে কিনা তার জানা নেই। মাঝে মাঝে এদিক ওদিক হয়ে যায়।

নিম্নমানের সাপ্লিমেন্ট বিক্রির ব্যপারে তিনি বলেন, কিছু সাপ্লিমেন্ট পরিচিত একজনের কাছে থেকে কিনতাম। যেহেতু প্রডাক্টগুলোর বিষয়ে অভিযোগ এসেছে আমি প্রডাক্টগুলো আর বিক্রি করব না এবং কাউকে পরামর্শও দিবনা।

এদিকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান সিদ্দিকী বলছেন, ডাক্তার না হলে কেউ ঔষধের নির্দেশনা দিতে পারবেন না। পুষ্টিবিদ হলে ডায়েটরি সাপ্লিমেন্টের পরামর্শ বা প্রয়োগ করতে পারেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে