শেরপুরকে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত ! অপরদিকে গৃহ ও ভূমি বরাদ্দের দাবিতে স্মারক লিপি প্রদান!

বগুড়ার শেরপুর উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার লক্ষ্যে উপজেলা টাস্কফোর্স ও যৌথ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় শেরপুর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোমবার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সভা শেষে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
শেরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা’র সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শেরপুর-ধুনট নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিবর রহমান। বিশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিলুফা ইয়াসমিন।
উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) এস এম রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শেরপুর পৌরসভার মেয়র জানে আলম খোকা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, সাপ্তাহিক আজকের শেরপুরের সম্পাদক সাইফুল বারি ডাবলু, মকবুল হোসেন, সীমাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গৌরদাস রায় চৌধুরী, ভবানীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নিমাই ঘোষ, সাপ্তহিক তথ্যমালার সম্পাদক সুজিত বসাক, শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি দীপক কুমার সরকার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামসুন্নাহার শিউলী, শহীদিয়া আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলহাজ্ব মাও: হাফিজুর রহমান প্রমূখ। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ নানা পেশাজীবি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, সরকারি প্রকল্পের আওতায় শেরপুরে এ পর্যন্ত উপজেলায় ৫০১ টি ঘর প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভূমিহীন-গৃহহীনরা কেউ বাদ পড়েছে কিনা আর কাউকে ঘর দিতে হবে কিনা এ সকল বিষয় নিয়ে উপজেলার সকল জনপ্রতিনিধি, সাংবাদকর্মী, ইমাম, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৈঠক করা হয়েছে। উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করার পরও যদি এই ধরণের কোন ব্যক্তি বা পরিবারের সন্ধান পাওয়া যায় তাদেরও পুনর্বাসন করা হবে।
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা ভূমি অফিস সুত্রে জানা যায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষ্যে ভূমি ও গৃহহীনদের পুর্নবাসনের নিমিত্তে শেরপুর উপজেলায় ‘ক’ শ্রেণির তালিকা যাচাই পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। এতে ১ম পর্যায়ে ১৬৩টি পরিবার, ২য় পর্যায়ে ১৭টি, ৩য় পর্যায়ে ১৪৫টি ও সর্বশেষ ৪র্থ পর্যায়ে ১৭১টি পরিবারকে পুর্নবাসনের মাধ্যমে ‘ক’ শ্রেণির ভুমি ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা সম্পন্ন করা হয়। তবে এ যৌথ সভায় আলোচনাক্রমে সকলের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ‘শেরপুর উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন’ মুক্ত ঘোষণা করার নিমিত্ত জেলা কমিটির কাছে পাঠানো হবে। জেলা কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপজেলাকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ ঘোষণা করবেন।
এদিকে শেরপুর উপজেলা সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ ও ভূমি বরাদ্দের দাবিতে স্মারক লিপি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির শেরপুর উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। একইদিন সোমবার দুপুর ১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানার কাছে তারা এই স্মারক লিপি প্রদান করেন।
বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির শেরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, “শেরপুরে মাত্র ৫০১টি ঘর বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরেও হাজার হাজার ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে রেখে এই ধরণের ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। আমরা এই উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানাই।” তাই উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করার আগে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে জরিপ করে সকলের জন্য ভূমি ও বাড়ি বরাদ্দ প্রদানের জন্য তারা জোর দাবি জানান।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন