প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ২৩:৫১

শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জমি দখলের অভিযোগ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন

শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি-
শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জমি দখলের অভিযোগ, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের গোড়তা গ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের  চাষ করা জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায় গোঁড়তা গ্রামের নাদু সিংয়ের চাষ করা সরকারি খাস জমি দখলের চেষ্টা করে স্থানীয় জোতদাররা। এজন্য সোমবার (২৮আগস্ট) সকাল ছয়টা থেকেই তারা জমিতে জোর করে ধানের চারা রোপণ করতে থাকে। এ সময় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ জমিটি ঘিরে রাখে। তাদের অনেকেই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ছিল বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী লোকেরা। নাদু সিং তার সম্প্রদায়ের লোকজন নিযয়ে বাধা দিতে গেলে জোতদারের লোকজন তাদেরকে ধাওয়া করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নাদু শিং বলেন, "সোমবার ভোর থেকেই আমার চাষ করা ছয় বিঘা জমিতে মজিবর রহমান ও আজগর আলী অন্তত দুইশ' জন ধারালো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এনে আমার জমি অবৈধভাবে দখল করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ আসার আগেই সকাল আট টার মধ্যেই তিন বিঘা জমি দখল হয়ে যায়। বাকি তিন বিঘা জমিতে পুলিশের উপস্থিতিতেই ধানের চারা লাগানো হয়েছে।"
তবে জমি দখলে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আজগর আলী। তিনি বলেন, "আমি কারো জন্য দখল করতে যাইনি। ২০১০ সালে এই জমিটা আমি কিনেছি। কিন্তু আদিবাসীরা সেটা দখল করে রেখেছিল। তাই আমি এলাকার লোকজন নিয়ে সে জমিতে ধানের চারা রোপন করেছি।"
এনিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা  বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরেই আজ সোমবার সকালে গোড়তা গ্রামে পুলিশ মোতাযয়েন করা হয়েছে। যতক্ষণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে ততক্ষণ পুলিশ ওই গ্রামে অবস্থান নিবে।
এ প্রসঙ্গ নিয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, ওই গ্রমে আদিবাসীদের সাথে এই জমির ঘটনায় উত্তেজনার সংবাদে তিনি সরেজমিনে গিয়েছিলেন। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তিনি উভয়পক্ষকে অনুরোধ করেছেন। জমিজমা নিয়ে আদিবাসীদের সাথে স্থানীয় জোতদারদের এই বিরোধ দ্রুতই নিষ্পত্তির করা হবে বলে তিনি বলেন।

তবে প্রশাসনের এ ধরনের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত হতে পারছেন না ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন। তাদের দাবি গত এক বছর ধরেই স্থানীয় জোতদাররা তাদের জমি দখল করার চেষ্টা করছে। তাদের উপর দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে কোন ধরনের প্রতিকার পায়নি।
আদিবাসী ইউনিয়নের শেরপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি গজেন সিং ও সাধারণ সম্পাদক প্রাণ কুমার সিং বলেন, অন্তত একবছর ধরে স্থানীয় জোতদার পরিবারগুলো আম্বইল ও গোড়তা গ্রাম থেকে আদিবাসী পরিবারগুলো উচ্ছেদের জন্য আদিবাসীদের চাষ করা জমি স্থানীয় কিছু জোতদার জোরপূর্বক দখল করে নিচ্ছে। জোতদাররা প্রতিনিয়তই তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। তারা কর্ম ক্ষেত্রে যেতে পারছেন না। ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারছে না। এসব নিযয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানিযয়েছেন তারা।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে