প্রকাশিত : ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ২২:১৭

বদলগাছীতে প্রচার-প্রচারণা ছাড়ায় চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও গাছ নিলামে বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি
বদলগাছীতে প্রচার-প্রচারণা ছাড়ায়
চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও গাছ নিলামে বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায়  দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন ও দুইটি বিদ্যালয়ে  বিদ্যালয়ের পাঁচটি  গাছ প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রিতে  অনিয়মের অভিযাগ উঠেছে। নিলামের নোটিশ টাঙানো ও মাইকে প্রচার-প্রচারণা ছাড়ায় প্রায় চার লাখ টাকার ভবন ও গাছগুলো মাত্র ৯২ হাজার ৭০০ টাকা নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। গত ২৮ আগষ্ট চারটি বিদ্যালয়ে পৃথক-পৃথক  সময়ে এই নিলাম ডাক অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিলামে অংশ নিয়ে কমদামে এসব মালামাল কিনে নিয়েছেন।
   খোঁজ নিয়ে জানা গেছে  তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  ভবন  ও সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষ অনুপযোগী হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর গত সোমবার তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন,  সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষ, কোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও  বিষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫টি গাছ নিলামে  বিক্রি করা হয়। নিলাম ডাকের আগে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে নিলামের নোটিশ ও মাইকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা করা হয়নি। একারণে  ব্যবসায়ীরা নিলামের বিষয়টি জানতে পারেননি। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নিলাম ডাকে অংশ নিয়ে একটি পরিত্যক্ত  ভবন, একটি পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষ ও পাঁচটি মেহগুনি এবং কড়ইগাছ  কিনে নিয়েছেন।
 ছাত্রলীগের  বদলগাছী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন  ২৫ হাজার টাকায় তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন কিনেছেন।  উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাললয়ের পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষ  ১০ হাজার ২০০ টাকায় কিনেন। কোলা ও বিষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি কড়ই ও চারটি মেহগুনির গাছ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকায়   মোস্তফা শাহরিয়ার ও  প্রদীপ নামে দুই ব্যক্তি কিনেছেন। তাঁরা দুজনই সরকারি দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
   তেতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুব আলম বলেন, আমি মসজিদের মাইকে ভবন নিলামের বিষয়টি সকলকে জানিয়েছি। তবে নোটিশ টাঙানো হয়নি।
    স্থানীয় বাসিন্দা রব্বানী বলেন,  দুটি বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন ও শ্রেণিকক্ষ এবং পাঁচটি গাছের মুল্য কমপক্ষে চার লাখ টাকা হবে। নোটিশ ও ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই নিলাম ডাক হওয়ায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সিন্ডিকেট করে মাত্র ৯২ হাজার ৭০০ টাকায় কিনেছেন।  আমিও নিলামে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলাম। তবে ছাত্রলীগের বাধার মুখে নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। তবে শিক্ষা কর্মকর্তা আমার নাম দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
   বদলগাছী  উপজেলা  ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হোসেন বলেন, আমি সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত শ্রেণিকক্ষ ১০ হাজার ২০০ টাকায় নিলামে কিনেছি। ভ্যাটসহ ১১ হাজার ৬০০ টাকা পড়েছে। আমি সর্বোচ্চ দামে কিনেছি। নিলামে কোনো সিন্ডিকেট করা হয়নি। 
    মোস্তফা শাহরিয়ার বলেন, আমি  গাছের নিলামে উপস্থিত ছিলাম। তবে গাছগুলো কিনিনি। প্রদীপ কুমার গাছগুলো কিনেছেন। মুঠোফোনে প্রদীপ কুমারকে পাওয়া যায়নি। একারণে তাঁর বক্তব্যে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
   বদলগাছী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামকে বলেন, নোটিশ টাঙানো হয়নি। তবে নোটিশ টাঙানো কথা প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকদের বলা আছে। আমার জানা মতে মসজিদের মাইকে নিলামের কথা বলা হয়েছে। তবে সুষ্ঠুভাবে নিলাম হয়েছে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে