প্রকাশিত : ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ২২:০৩

বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে আইনজীবী সহকারীর মৃত্যু: পুলিশের তিন সদস্যের কমিটি গঠন

ষ্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে আইনজীবী সহকারীর মৃত্যু: পুলিশের তিন সদস্যের কমিটি গঠন

বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে আইনজীবীর সহকারী হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। কমিটিকে আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা পুলিশ।

বুধবার দুপুরে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আখতার। তাকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। বাকি দুজন হলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) পরিদর্শক জি এম শামসুন নূর।

এদিন বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে হাবিবের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনেরা। এর আগে মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাবিবুর রহমান মারা যান। ওই দিন সন্ধ্যা পৌনে ৬ টার দিকে শহরের জজ কোর্ট চত্বর থেকে একটি হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

হাবিবুর রহমান শাজাহানপুরের রানীরহাট চকজোড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে এবং বগুড়া জজ কোর্টে আইনজীবী মো. মঞ্জুরুল হকের সহকারী (মোহরার) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আইনজীবী মঞ্জুরুল হক তার আপন মামা। এ ছাড়া তিনি জেলা আইনজীবীর সহকারী সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় দশ বছর আগে শাজাহানপুরের জোড়া তালপুকুর এলাকায় বিপুল নামে এক কিশোরকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। সেই হত্যার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন হাবিবুর রহমান। ওই হত্যার ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী ছিলেন তার সৎ মা খুকু বেগম। কিন্তু গত ২ আগস্ট খুকি বেগমকে হত্যা করা হয়। ৪ আগস্ট বস্তাবন্দি তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এ ঘটনার কিছু দিন পরেই খুকি বেগমের স্বাক্ষ্যের তারিখ ছিল বিপুল হত্যা মামলার।
তবে ৮৫ বছরের এই বৃদ্ধার দুটি পা নিখোঁজ ছিল। একটি পা পাশের একটি পুকুরে পাওয়া যায়। আর বাকি আরেকটি পা আজকে একই এলাকার একজনের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এই বাড়ির এক নারীকে সন্দেহভাজন হিসেবে নিয়ে আসলে তখন হাবিবুরের নাম উঠে আসে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে হাবিবুর আটক করা হয়। কিন্তু ওই নারীর সামনে নিয়ে আনা হলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন হাবিবুর রহমান। এরপর হাসপাতালে নেয়া হলে রাতে মারা যান।

হাবিবের স্বজন ও সহকর্মীরা জানান, সন্ধ্যায় কোর্ট থেকে বের হওয়ার সময় সাদা পোশাকে কয়েকজন হাবিবকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে হাবিবের মামা আইনজীবী মঞ্জুরুল হক খবর পেয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ডিবি পুলিশ তাকে আটক করেছে। পরবর্তীতে রাতে আবার খবর পান যে হাবিব মারা গেছেন।

তাদের অভিযোগ, ডিবি পুলিশ হাবিবুরকে কোর্ট চত্বর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, হাবিবকে পুলিশ কোনো নির্যাতন করেনি। তার পরেও এ ঘটনায় আমাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাবিবের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফলতি থাকলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

উপরে