শিবগঞ্জে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু

বগুড়ার শিবগঞ্জের বানাইল মধ্যপাড়া গ্রামের শ্রী ভজন কুমার মোহন্ত এর স্ত্রী আশা রানী (২৮) সোমবার রাতে নিজ শয়ন কক্ষে রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
তার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে পূজা ও ভোটে আনসার বাহিনীর মাষ্টার রোলের সদস্য হয়ে দেশ সেবার কাজে আত্ম নিয়োগ করে থাকে। এবারও সে বানাইল বারোয়ারী উত্তরপাড়া পূজামন্ডপে কর্তব্যরত ছিল। মহা নবমীর রাতে হঠাৎ অসুস্থতা বোধ করলে আরতি শেষে কর্তব্যরত পূজামন্ডপ এর টিম লিডারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে ঘরে অবস্থান কালে রহস্যজনক ভাবে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের শাশুরী সুকৃতি রানী লাটু বলেন, আমার বউ মা আশা পূজামন্ডপে আনছারের দায়িত্ব পালন শেষে শারীরিক অসুস্থতার কারণে আমার কাছে আসে এবং বলে মা আমার শরীরি খারাপ লাগছে। আমি বাড়িতে গেলাম। তোমরা পূজা ও আরতি শেষ করে বাড়ীতে আসেন। এ ঘটনায় তার স্বামী ভজন কুমার মোহন্ত বলেন, ঘটনার সময় বাড়ীতে কেউ ছিলনা আমি দোকানে ছিলাম। আমার স্ত্রীর অসুস্থ্যতার কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি করে দোকান বন্ধ করে বাড়ীতে যাই। বাড়ীতে গিয়ে দেখি ততক্ষে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেছে। এসংবাদে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। আমি আমার স্ত্রীর অসুস্থ্যতা ও শারীরিক সমস্যায় আন্তরিক ছিলাম। আমার সঙ্গে তার কোন পারিবারিক কন্দন ছিল না। আমরা একে অপরে মিলে মিশে ঘর সংসার করতাম। এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানা সহকারি পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মৃত দেহ মেঝেতে পায়। ঘটনাস্থলের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে মৃত দেহ শিবগঞ্জ হাসতালে প্রেরণ করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক নানা পরিক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর মহিলা কন্সটবল দ্বারা শিবগঞ্জ হাসপালে পুলিশ তার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন তৈরি করে। এ রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন তার গলায় সামান্য কিছু রশির দাগ ছিল। এব্যাপার শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউফ বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে কোনো দুষ্কৃতিকারী তার পিছু নিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। তার পারিবারিক কলহের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর রহস্য উদঘটনে সার্বিক তথ্য পাওয়া যাবে। এঘটনায় নিহতের মা শ্রীমতি সন্ধ্যা রানী বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। মৃতের ময়না তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দায়িত্বরত পুলিশ অফিসারের হাতে এসে পৌছিলে হত্যার মূল রহস্য উদঘটনে ব্যাপক সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বলে জানা গেছে। ময়না তদন্ত শেষে সমঝোতার ভিত্তিতে তার মৃত দেহ নিকট আত্মীয় নিকট হস্তান্তর করা হবে।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন