প্রকাশিত : ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ২৩:১৯

গাবতলীতে বউমেলায় গৃহবধূ ও তরুনীদের উপচেপড়া ভীড়

গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি
গাবতলীতে বউমেলায় গৃহবধূ ও 
তরুনীদের উপচেপড়া ভীড়

বেশ আনন্দঘন পরিবেশের মধ্যদিয়ে পোড়াদহ মেলার পরের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হলো বগুড়া গাবতলীর মহিষাবান ত্রিমোহনী গ্রামে বউমেলা। বরাবরের মতোই এবারও মেলায় ছিল গৃহীনি নারী, তরুনী ও শিশুদের উপচেপড়া ভীড়। এই বউমেলায় কোন পুরুষ প্রবেশ করে না। শুধুমাত্র নারীরাই কেনা-কাটা করে থাকেন। নারীরা পোড়াদহ মেলায় যেতে না পারায় পছন্দের কেনা-কাটা স্বাচ্ছন্দে করতে  বউ মেলার আয়োজন করে স্থানীয় যুবসমাজ। বিগত ৩০বছর আগে থেকে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। কস্মেটিকস্, বিভিন্ন খেলনা, নাগরদোলা, চরকিসহ প্রায় শতাধিক দোকানপাট ছিল এই বউ মেলায়। বগুড়া শহরের ফারহানা আকতার মীম বলেন, তিনি দাদার বাড়ী মহিষাবান গ্রামে বেড়াতে এসে বউমেলায় এসেছেন মূলত আনন্দ উপভোগ করার জন্য। শেরপুরের বৃদ্ধা রাজিয়া বেগম (৫৮) বলেন, আমি ভাইয়ের বাড়ীতে বেড়াতে এসে নাতনীর জন্য বেশকিছু কসমেটিকস ও খেলনা কিনেছি। উত্তর চেলোপাড়ার কসমেটিকস বিক্রেতা কলি বেগম জানান, তারা গতবছরের মতো এবারেও বউমেলায় বিক্রি করতে এসেছেন বিভিন্ন রকমের খেলনা। কিন্তু এবার নারীদের উপস্থিতি কম হওয়ায় কেনাবেচাও কম হয়েছে।স্থানীয় মাটির খেলনা ব্যবসায়ী মিনা রানী বলেন, গতবছরের মতো এবার মেলাটা জমেনি। 
এছাড়াও বগুড়া শহরের আইসক্রিম ব্যবসায়ী শহীদুল, শাহজাহানপুরের ফুচকা ব্যবসায়ী বাবর আলী ও কর্মকার সুব্রত ঘোষ বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম উর্ধ্বগতি থাকায় এবারের মেলায় কেনাবেচা অনেক কম। ম্যাজিক নৌকা ও চরকিওয়ালা আ: রহিম বলেন, এসএসসি পরীক্ষা চলমান থাকায় তরুনীদের উপস্থিতি অনেকটা কম। তারপরেও শিশুদের আনন্দ দিতে পেরে তারা খুব খুশি। মাটির জিনিস বিক্রেতা স্থানীয় মহিষাবান পালপাড়ার নরেশ পাল জানান, বাড়ীর কাছাকাছি মেলা হওয়ায় তিনি বেশ উপকৃত। বিকেলের মধ্যেই তিনি দুই হাজার টাকার মাটির জিনিস বিক্রি করেছেন। বগুড়া লতিফপুরের সুরাইয়া আকতার বলেন, ব্যতিক্রমধর্মী এই বউমেলায় এবারেই তিনি প্রথম বেড়াতে এসেছেন। এ মেলায় শুধু নারীরা থাকায় বেশ আনন্দ পাচ্ছেন। 
এ ব্যাপারে বউ পরিদর্শনে গিয়ে গাবতলীর ইউএনও নুসরাত জাহান বন্যা বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই বউমেলায় নারীরা কেনাকাটা করতে এসে বেশ আনন্দ উপভোগ করেছে। বেশ স্বাচ্ছন্দে তারা কেনাকাটা করতে পারেন। আমি নিজেও আনন্দিত এই মেলায় এসে। নারীদের নিরাপত্তায় নারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বউমেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় প্রতিবছর দিনব্যাপী মেলাটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হয়। বিগত ৩০বছর আগে থেকে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে চার’শ বছর পূর্ব থেকে স্থানীয় সন্ন্যাসী পূজা উপলক্ষে গাবতলীর মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ী বন্দরের পূর্বধারে গাড়ীদহ নদীর পশ্চিমধারে সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে একদিনের জন্য ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা বসে। প্রতিবছর বাংলা সনের মাঘ মাসের শেষ অথবা ফাল্গুন মাসের প্রথম বুধবার মেলাটি হয়। এই পোড়াদহ মেলার ঠিক পরেরদিন বৃহস্পতিবার গাবতলীর মহিষাবান মধ্যপাড়া গ্রামে ত্রি-মোহিনী নামকস্থানে এই বউমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।  

দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন

 

উপরে