কি হয় শেরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে?

দলিল লেখক সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছে বগুড়ার শেরপুরের ভূমি সেবা। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হতিয়ে নেওয়া হচ্ছে এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সমিতির অনুমোদন ছাড়া কোনো দলিল রেজিস্ট্রি হয় না। দীর্ঘদিন ধরেই চলছে এই সিন্ডিকেট। বেআইনি ভাবে সরকারি অফিসের ভিতরেই পেশাজীবী সংগঠনের সমিতির অফিস সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। একদিকে যেমন দলিল লেখক সমিতির অফিস থেকে দিনে সাধারণ মানুষের সাথে জবরদস্তি করা হচ্ছে, অপরদিকে রাতে সেখানেই চলছে জুয়া ও মাদকের কারবার। কিন্তু অফিস কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করছে।
এমন নানা অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী নারী। শেরপুর পৌর শহরের কলেজ রোড এলকার বাসিন্দা নাজনিন পারভীন পলি’র অভিযোগ, দলিল রেজিস্ট্রির সকল কাগজপত্রের সঠিকতা নিশ্চিত করার পরেও শেরপুর দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন তার কাছে থেকে ১ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন। এছাড়াও সাবরেজিস্ট্রি অফিস সহায়ক জাহিদুল ইসলাম ২০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। বিষটি নিয়ে সমিতির সভাপতি এস.এম ফেরদৌসের কাছে গেলে তিনিও টাকা ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রি হবে না বলে জানিয়ে দেন। যদিও অফিসের কর্মকর্তা সকল কাগজপত্রের সঠিকতা নিশ্চিত করে দলিল লিখে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু জামাল মোটা অংকের টাকা দাবি করে দলিলটি আটকে রাখেন। এরপর সমিতির সভাপতি ফেরদৌস ও অফিসের কর্মচারী জাহিদুল ইসলামও তার কাছে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা জমির ক্রেতাকে জমি কিনতে নিরুৎসাহিত করেছেন। এতে জমির ক্রেতা এখন জমিটি কিনতে অস্বীকার করায় পলি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে তিনি দাবি করছেন।
তবে শেরপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এস এম ফেরদৌস জমি নিবন্ধন করা নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শেরপুরে দলিল লেখক সমিতি তাদের দীর্ঘদিনের একটি সংগঠন। অফিস চত্বরের ভিতর তারা একটি টিনশেড কক্ষে সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন তারা। দলিল লেকার যে পারিশ্রমিক পান সেই টাকায় চলে সমিতির কার্যালয়।
এবিষয়ে শেরপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, সমিতির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে আমার কাছে কেউ দলিল নিয়ে আসলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিক থাকলে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন জিহাদী বলেন, অভিযোগের আলোকে তিনি বগুড়া জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলবেন। এছাড়া আগামী রোববার (১০ মার্চ ) জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবেন।
দৈনিক চাঁদনী বাজার / সাজ্জাদ হোসাইন