প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০২৪ ২৩:২১

মান্দায় গ্রাহকের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সমবায় সমিতির সভাপতি

ভুক্তভোগীদের আহাজারি
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
মান্দায় গ্রাহকের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা সমবায় সমিতির সভাপতি
আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির অফিসের সামনে ভুক্তভোগীদের ভীড়। - প্রতিনিধি

নওগাঁর মান্দায় প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামানিক। উপজেলার সতীহাট অফিসে গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা সমবায় অফিসের মাধ্যমে নিবন্ধন নিয়ে সঞ্চয় ও ঋণদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন তিনি। এঘটনায় শুক্রবার দুপুরে সমিতি কার্যালয়ে তালা দিয়েছে ভুক্তভোগী বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা।

গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে ব্যাংকের আদলে আমানত গ্রহন করে গ্রাহকদের প্রতি মাসে লভ্যাংশ দিতে থাকে। শুরুর দিকে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে আমানতের বিপরীতে গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা নিয়মিত দিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি, কিন্তু তিন-চার মাস ধরে গ্রাহকদের আমানত ফেরত ও লভ্যাংশের টাকা প্রদানে টালবাহানা করতে থাকেন। আমানতের টাকা ফেরতে গ্রাহকেরা চাপ দিতে থাকলে লাপাত্তা হন সংস্থার সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামানিক। এখন আমানতের টাকা ফেরতের জন্য প্রতিদিনই গ্রাহকরা সমিতির কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছেন।
শ্রীরামপুর গ্রামের ভুক্তভোগী কামরুন্নাহার সুইটি বলেন, আমার স্বামী অনেক কষ্টে অর্জিত ১২ লক্ষ টাকা আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতিতে আমানত রেখেছিলেন। গত ৩ মাস ধরে আমরা কোন লভ্যাংশ পাচ্ছি না। আমাদের আমানতের টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।  
নারায়ণপুর (পালপাড়া) গ্রামের বিশ্বনাথ দাস কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মেয়ের বিয়ের জন্য এই সমিতিতে আমি ৪ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আমানত রেখেছিলাম। সমিতির সভাপতি আমানতের টাকা আজ দিবে কাল দিবে বলে গত পাঁচ মাস থেকে আমাকে ঘুরাচ্ছে। টাকা হাতে না পাওয়ার কারনে আমার মেয়ের বিয়ে ভেঙে গেছে।
এছাড়াও নওগাঁ সদর উপজেলার পয়না গ্রামের কুলসুম বেগমের ৪ লক্ষ, মান্দা উপজেলার জহুরা ১লক্ষ ৩০ হাজার, সফিকুল ইসলাম ৫ লক্ষ ৭০ হাজার, আঃ সালাম ১১ লক্ষ সহ প্রায় দুই শতাধিক গ্রাহকের আমানতের সাড়ে তিন কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে সমবায় সমিতিটি।
এ বিষয়ে আল-আরাফাহ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামানিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ডিজিএম রুবেল হোসেন বলেন, আমি অত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম। বিগত ৩/৪ মাস পূর্বে আমাকে জোর পূর্বক চাকুরিচ্যুত করা হয়। পরবর্তীতে কর্মরত সকলকেই চাকুরি হতে অব্যহতি প্রদান করেন সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান প্রামানিক।
উপরে