প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:১২

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে ১৩টি গ্রামবাসীর ক্ষতিপূরনের দাবীতে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে ১৩টি গ্রামবাসীর ক্ষতিপূরনের দাবীতে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চত্বরে ১৩টি গ্রামের ৪হাজার গ্রামবাসী ক্ষতিপুরনের দাবীতে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থ ১৩টি গ্রামের ৪হাজার গ্রামবাসী ক্ষতিপুরনের দাবীতে ঘন্টাব্যাপি মাববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। 
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মোঃ গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভমিছিল অনুষ্টিত হয়। এতে তিনি বলেন, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি আদায়ে গত ৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লি: পার্বতীপুর, দিনাজপুর কে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীরা লিখিতভাবে অভিযোগ করি। গত ২২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে আবারও লিখিতভাবে অভিযোগ করি। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে খনি কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটামের দিয়ে জানানো হয়। এরপর আবারও ২২ আগস্ট ২০২৪ এবং ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে লিখিতভাবে অবগত করা হয়। আগামী ০৭দিনের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ ঘর-বাড়ী সার্ভের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সাংবাদিক সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল সহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান। সেই মর্মে বৈগ্রাম-কাশিয়া ডাঙ্গা, মোবারকপুর, জব্বর পাড়া, দক্ষিণ রসুলপুর (বড়), দক্ষিণ রসুলপুর  (ছোট), পূর্ব জ্জবর পাড়া, চক মহেশপুর, হামিদপুর, উত্তর চৌহাটি, চৌহাটি, সাহাগ্রাম, দূর্গাপুর সহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থদের পূণরায় ক্ষতিপূরণ প্রদানের সবিনয়ে জোর দাবী জানিয়েছিলাম কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে টালবাহানা করছেন দীর্ঘদিন ধরে। আন্দোলন করেও খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতি অন্যয় করছে। আমাদের দাবী মেনে নেয় নি।
আমাদের ৬দফা চুক্তির দাবীসমূহ: (০১) খনি কর্তৃপক্ষের সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিটি পরিবার হতে চাকুরী দেওয়ার কথা থাকলেও গত ৫ বছরেও তা দেওয়া হয়নি, দ্রæত ক্ষতিগ্রস্থদের স্থায়ী চাকুরী দিতে হবে। 
(০২) ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ১৩টি গ্রামের বাড়ীঘর ফাটল, কাঁপুনি, ঝুঁকিপূর্ণভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে তাদেরকে দ্রæত পুন:বাসন করতে হবে। (০৩) ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার ভূমিহীন প্রতিটি পরিবারকে মাইনিং সিটি অথবা উন্নতমানের বাসস্থান তৈরি করে দিতে হবে। (০৪) ক্ষতিগ্রস্থদের এককালীন অবশিষ্ট ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে। (০৫) ক্ষতিগ্রস্থদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা পূর্ণ নির্মান করে দিতে হবে। (০৬) ক্ষতিগ্রস্থদের যাদের জমি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদেরকে কয়লা উৎপাদন বোনাস ৫% দিতে হবে। 
তিনি মানববন্ধনে বলেন, এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন কিছুই বাঁকি নাই। বর্তমান যে গ্রামগুলি রয়েছে সেই গ্রামগুলির জনসাধারণ আমরা রাতে ঘুমাতে পারছিনা। প্রতি মূহুতে সামনে বিপদ দেখছি। খনি কর্তৃপক্ষ আমাদের এই ০৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং আমরা মানববন্ধনের মাধ্যমে আবারও ০৬ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে অবগত করছি। এই মানববন্ধনে বিদ্যুৎ জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাননীয় উপদেষ্টার নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ করছি আমাদের গ্রামগুলিকে ক্ষতিপূরণ সহ সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে আমরা অধিকার আদায়ে শুধু আন্দোলন করে আসছি। বাস্তবায়নে বর্তমান কয়লা খনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকার আমাদের প্রতি অন্যায় ও বৈসম্য সৃষ্টি করছে। 
মানববন্ধনে সংগঠনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ আলী হোসেন, মোঃ রবিউল ইসলাম মন্ডল, আল বেরনী, সাতার ইকবার নয়নন, আবেদ আলী, সাইদুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, সাইফুল ইসলাম, গোলাম রব্বানী, আব্দুর রহমান বাচ্চু, রবিউল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, হোসেন আলী, মহারাজ, মেনহাজুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ মন্ডল, বিপ্লব হোসেন ও মমিদুল ইসলাম, ও এবং তোফাজ্জাল হোসেন, বাবু , মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওযা যায় নি।

 

উপরে